১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এক নতুন যুগের সূচনা হয়। ইউরোপের বহুকালের আধিপত্য ইতিহাসে পরিণত হয়। আবির্ভাব ঘটে দুই নতুন শক্তিজোটের-একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরেকদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন। উদারনৈতিক গণতন্ত্র ও পুঁজিবাদের আদর্শকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেয় পশ্চিমি জোটের, অন্যদিকে সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদের আদর্শকে নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন নেতৃত্ব দেয় পূর্ব জোটের। দু-দিকে দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের এই জোট সারা দুনিয়াকে দুটি মেরুতে ভাগ করে ফেলে। ফলস্বরূপ পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলি এক মেরুতে, অন্যদিকে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলি আরেক মেরুতে অবস্থান করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী পর্বে ক্ষমতার এই মেরুকরণ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাসে দ্বিমেরুকরণ নামে পরিচিত। এই সময় দুই মহাশক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে দেখা যায় এক অদ্ভুত রেষারেষি। শুরু হয়ে যায় অস্ত্র প্রতিযোগিতার দৌড়। দু-দেশের মধ্যেকার এই না যুদ্ধ না শাস্তির পরিস্থিতিকেই বলা হয়ে থাকে ঠারে পড়ছি (Cold War)। ঠান্ডা লড়াইয়ের সূচনা ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যানের নীতি ঘোষণার পরে এবং ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এর পরিসমাপ্তি ঘটে।
ঠান্ডা লড়াই ছাড়াও জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের সূচনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। জোট- নিরপেক্ষ আন্দোলন তৃতীয় বিশ্বের সদ্য স্বাধীন দেশগুলিকে নিয়ে গড়ে ওঠে.