বক্তা
উদ্ধৃত উক্তিটি অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নানা রঙের দিন’ নাটকের অন্তর্গত। উক্তিটি নাটকের প্রধান চরিত্র রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের স্বগতোক্তি।
রজনীকান্তের পরিপার্শ্বিক পরিবেশ
কোন একদিন ‘শাজাহান’ নাটকের অভিনয় শেষ হওয়ার পর ‘দিলদার’ চরিত্রে অভিনেতা রজনীকান্ত নেশাগ্রস্থ অবস্থায় গ্রীন রুমে ঘুমিয়ে পড়েন। মধ্যরাতে হুঁশ মিলে নিজের উপরে বিরক্ত হয়ে ওঠেন তিনি। একাকী মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে তার সমগ্র প্রেক্ষাগৃহেকে মৃত্যুর পুরী মনে হয়। জনমানবহীন, অন্ধকার পরিবেশে থেকে নেশার জড়তার রজনীকান্ত একসময় উত্তেজিত ও ভীত হয়ে পড়ে। ‘রামব্রিজ’ বলে কয়েকবার উচ্চস্বরে ঢাকায় তার ঐ কণ্ঠস্বর প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। নিজে বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি।
ভাবনা
এক সময় নিজের বেহিসেবি ভাই বোনের সঙ্গে সম বয়স্ক মানুষদের তুলনা করে রজনীকান্ত আত্মসমালোচনা করেছেন। তিনি অনুভব করেছেন, ষাটোর্ত্তীন মানুষের অসংযমী জীবন যাপন করা অনুচিত। নিয়ম মাফিক ঘুম, সকাল সন্ধ্যা সুস্থ থাকার জন্য হাঁটাহাঁটি করা, সন্ধ্যেবেলা কীর্তন, ঈশ্বর নাম জপ করা তার উচিত। কিন্তু অমলিন শিল্পী সদ্দার অধিকারী রজনীকান্ত সম্পূর্ণ বিপরীত জীবন যাপন করেন। নেশায় মত্ত অবস্থায় দিলদারের পোশাক পরিহিত রজনী চাটুজ্জে নিজেকে বলছেন- “আর আপনি রজনীবাবু এসব কি করেছেন মশাই?… এসব থিয়েটারি ভাষা কি আবোল তাবোল বকছেন বলুনতো?” তার মনে হয়েছে এবার মেকআপ তুলে, ভদ্র পোশাক পরে বাড়ি যাওয়াটা উচিত। কারণ এভাবে মনের মধ্যে ঘনীভূত দুশ্চিন্তা নিয়ে বেশিক্ষণ ভাবলে তিনি নির্ঘাত ‘হার্টফেল’ করবেন।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর