‘শহরে অসুখ’
‘আমি দেখি’ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় শহরের একটি প্রধান অসুখের কথা বলেছেন। শহর মানেই যন্ত্র সভ্যতার আগ্রাসন। ঘন জনবসতিপূর্ণ, কলকারখানা পরিবেষ্টিত শহর মানুষ বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণীয় অবকাশ পায়না। বড় বড়, উঁচু উঁচু ঘরবাড়ি শহরের আকাশ ক্ষীণ হয়ে আসে। যানবাহনের ধোঁয়ায় ও শব্দে বাতাস দূষিত হয়ে পড়ে। জন বাহুল্যের কারণে, বসতির প্রয়োজনে এবং স্বার্থন্বেষী মানুষের লোভে মৃত্যু ঘটে গাছপালার। শহরে সবুজের অভাব দেখা দেয়। শহরের মানুষ এহেন আগ্রাসী মনোভাব এবং লোভী মানসিকতাকে কবি ‘শহরের অসুখ’ বলতে চেয়েছেন।
তাৎপর্য
শহরে সাধারণত গাছপালা কম থাকে, চাষের জন্য বিস্তৃত শস্য ক্ষেত, বিস্তীর্ণ জঙ্গল থাকেনা। যে কটি গাছগাছরা, যতোটুকু সবুজ শহরে থাকে তাও বায়ু ও মাটি দূষণের কারণে ধ্বংসন্মুখ হয়ে পড়ে। অন্যদিকে স্বার্থান্বেষী লোভী মানুষ নিজেদের স্বার্থে নির্বিচারে গাছপালা ধ্বংস করে। কৃত্রিম সুখের কারণে মানুষের রেহেন কার্যকলাপকে কোভিদ শহরের চিরকালীন ‘অসুখ’ বলেছেন। এই অসুখের লক্ষণ হলো সবুজকে গ্রাস করা। উদ্ভিদের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল মানুষ প্রতিনিয়ত সভ্যতার দোহাই দিয়ে সবুজ নিধন করে চলেছে। একে কবি ‘সবুজ খাওয়া’ বলেছেন। তৎক্ষণিক সুবিধার্থে সবুজাঞ্চল গ্রাস করে মানুষ তার ভবিষ্যতের জন্য ডেকে আনছে সমূহ বিপদ।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর