কবির অনুভূতি
‘ধানখেত থেকে’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় সামাজিক অনাচারে কবির মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। ২০০৬ থেকে ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে সিঙ্গুরের কৃষি জমি আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত এই কবিতায় সমকালীন উত্তাল রাজনীতির ছাপ স্পষ্ট। কবি দেখেছেন কেমন করে শাসকের চোখ রাঙানি মুছে দিয়ে মানুষের প্রতিবাদের ভাষা। কবি অনুভব করেছেন সহায়হীন মানুষ নীরবঞ্চনার প্রতিকারের জন্য নিরুপায় হয়ে ভরসা করেছে বিধাতার বিচারের। কবি লিখেছেন-
“যে-মেয়ে নিখোঁজ ছিন্ন ভিন্ন জঙ্গলে তাকে পেয়ে আমি কি তাকাবো আকাশের দিকে বিধির বিচারের চেয়ে?”
এই প্রশ্ন অনিবার্য হয়ে উঠেছে কবির কাছে।
কবির প্রতিক্রিয়া
মানুষ হিসেবে অন্য মানুষের পাশে থাকাই সংগত বলে মনে করেন কবি। তাই জননী-জন্মভূমির দুর্দিনে তার সঙ্গে লগ্ন হয়ে থাকতে চান তিনি। সামাজিক অনাচার মুখ বুঝে মেনে না নিয়ে, ভাগ্যের হাতে ভবিষ্যতের ভার না দিয়ে ক্ষতবিক্ষত বর্তমানকে প্রতিবাদের মধ্যে দিয়ে সরিয়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে কবি। সমাজের গভীর অবক্ষয় ভগবানের বিচারে প্রত্যাশা করাকে কবির নির্বুদ্ধিতা মনে হয়েছে। তাই তিনি চেয়েছেন প্রতিবাদ করতে। কিন্তু তিনি জানিনা একা একা প্রতিবাদ করা যায় না।
আবার তিনি বিশ্বাস করেন তার কলম জন্ম দিতে পারে বিপ্লবের। তাই সময়ের অভিঘাতে কবির মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে, তা তিনি প্রকাশ করেছেন আলোচ্য কবিতা। কবিতায় শব্দের শক্তিতে তিনি বিস্ফোরণ ঘটাতে চেয়েছেন মানুষের মনে। মূল্যবোধের নবনির্মাণ করতে চেয়েছেন মানুষের মনে। কবির সজাগ বিবেক সমাজ সংস্কারের দায়বদ্ধতা উপলব্ধি করে আলোচ্য কবিতায় মানুষের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর