মাউস কি এবং কত প্রকার ও বিভিন্ন কাজ?

বর্তমানের টেকনোলজির বড় একটি অংশ হল কম্পিউটার, এবং এই কম্পিউটারটি কে সম্পূর্ণভাবে কন্ট্রোল করা যায় ছোট্ট একটি ডিভাইস মাউস দ্বারা।

সুতরাং আজকে আমরা জানবো এই ছোট্ট একটি ডিভাইস মাউস কী?এবং কত প্রকার ও বিভিন্ন কাজ? কম্পিউটারে কিবোর্ড ও মাউস কি?

মাউসকে মাউস বলা হয় কারণ – এবং এটি কি দেখতে অনেকটি মাউস আকৃতির হয়ে থাকে, অর্থাৎ তুলনামূলক অনেকটি ইন্দুর মতো দেখতে হয়ে থাকে। ও তার পাশাপাশি ইঁদুরের যেমন লেজ থাকে, ঠিক একই রকম ভাবে কম্পিউটার মাংসের তার যুক্ত একটি কর্ড থাকে ।

মাউস আবিষ্কারের ইতিহাস? মাউস কি?

সর্বপ্রথম এই মাউসটি আবিষ্কৃত করেন ডগলাস এঙ্গেলবার্ট (Douglas Engelbart)। এবং তার আবিষ্কারের প্রথম মানুষটি পরীক্ষা করার জন্য ডেমো হিসেবে তিনি 1964 সালে “এ রেসার্চ সেন্টার কম্পিউটার” (A Research Center for Augmenting Human Intellect) নিয়ে গিয়ে তার প্রেজেন্টেশনটা করেন।

শুধু তার আবিষ্কার এই প্রথম মাউসটি এখনকার মতো এতটা উন্নত মানের ছিল না। তখন মাউস অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন ডিভাইসগুলি একটি কার্ড বা ভেতরের তার সঙ্গে সংযুক্ত ছিল।

এবং যেটি ব্যবহার করা অনেকটাই ব্যয়বহুলও খুব সহজ একটা ছিল না। অর্থাৎ ব্যবহার করার জন্য আপনাকে অনেকটা ট্রেনিং এর প্রয়োজন দরকার ছিল।

এবং পরবর্তীকালে তিনি মানুষটির প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কাজে করেন। তারপর আস্তে আস্তে বিভিন্ন ইন্টারফেস সুবিধা বাড়াতে শুরু করে।

এবং তার রেজাল্ট বর্তমানে এখন খুব দ্রুত আকারে অপটিক্যাল প্রযুক্তি সহ খুব ভালোভাবে আমরা যেকোনো কাজ করতে পারি।

মাউস কোন কাজে ব্যবহার হয়?

বর্তমানে মাউসের ব্যাপার সীমিত অবস্থায় নেই, স্কুল থেকে কলেজ সাইন্স থেকে স্যাটেলাইট, সমস্ত জায়গায় আপনি বিভিন্নভাবে ধরনের মাউসের ব্যবহার দেখতে পাবেন।

তবুও তার মধ্যে থেকে প্রধান বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাউসের ব্যবহার আমরা নিচে আলোচনা করছি।

নেভিগেশন :- আপনি মাউস ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের নেভিগেট করতে পারবেন, অর্থাৎ আপনার কম্পিউটারে স্কিনে থাকা বিভিন্ন ফাইল এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরানো কিংবা কোন নির্দিষ্ট জায়গায় ক্লিক করা।

স্ক্রিনে ক্লিক করা :- যখনই আপনি কোন কিছু ফাইল ভিডিও অডিও ওপেন করতে চাইবেন আপনাকে অবশ্যই ওখানে ক্লিক করতে হবে, সুতরাং আমরা মাউসের দ্বারা স্কিনে ক্লিক করাতে পারবো।

ডবল ক্লিক:- দিবেন ধরলে প্রোগ্রামিং ফাইল বা আমাদের কম্পিউটারে কোন এপ্লিকেশন ইন্সটল করতে গেলে, ডবল ক্লিক করতে হবে, যা এই মাউসের দ্বারা খুব সহজেই করতে পারবো।

ড্র্যাগ-এন্ড-ড্রপ:- আপনি কোনো কিছু ফাইল কপি না করে, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে চান। তাহলে আপনাকে ড্রাগ ড্রপের সহায়তা নিতে হবে, । আর এই কাজটি মাউসের দ্বারা খুব সহজে করতে পারবেন।

স্ক্রোল করুন:- বিভিন্ন ধরনের বড় বড় টেক্সট ফাইল পড়তে গেলে আপনাকে নিচের দিকে আসতে হবে বা স্ক্রোল করতে হবে, যা আপনি মাউসের দ্বারা খুব সহজে করতে পারবেন।

গেম:- বিভিন্ন ধরনের গেম খেলতে গেলে আপনাকে অনেক সেটিং বা কাস্টমাইজ করতে হয়ে থাকে, যদি না আপনার কাছে মাউস থেকে থাকে তাহলে গেমের বিভিন্ন সেটিং বা কাস্টমাইজ করতে পারবেন না।

কিবোর্ড এর কাজ:- বর্তমানে বিভিন্ন বিভিন্ন এডভান্স মাউস মার্কেটে এসেছে, যা সাহায্যে কিবোর্ডের অনেক কাজে আপনি করতে পারবেন,

যেমন ধরুন কোন কিছু ফাইল আপনি কিবোর্ড ছাড়াই কপি করবেন কিংবা পেস্ট করবেন, অথবা কিবোর্ড ছাড়া টাইপিং করবেন,

এই ধরনের আরও নিত্য নতুন ফিচারস আপনি এডভান্স মাংসের মধ্যে পেয়ে যাবেন।

অটোমেটিক:- আপনি কি চান মাউসে হাত না দিয়ে কিছু ছোটখাটো কাজ আপনার মাউস অটোমেটিক করতে থাকবে, সেটাও advance মাউসের দ্বারা সম্ভব।

সিলেক্ট করা:- আপনি মাউসের ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের টেক্সট ফাইল চেক করতে পারবেন, অর্থাৎ আপনি একসঙ্গে অনেকগুলো ফাইলসহ লেখা নির্বাচন করে কপি থেকে ডিলিট সবকিছুই করতে পারবেন।

মাউসের কয়টি অংশ রয়েছে ও তাদের কাজ গুলো কী কী?

যদিও মাংসের বিভিন্ন ভাগ ও তাদের কাজগুলো আলাদা রয়েছে, তবে বর্তমানে যে সকল জনপ্রিয় ও যাদের ব্যবহার প্রচুর হয়ে থাকে, সেই অনুযায়ী আমরা মাউসকে বিভিন্নভাবে ভাগ করেছি যা নিচে আলোচনা করব।

বডি (Body):- মাউসের মূল অংশ হচ্ছে বডি বা কেসিং (casing)। অর্থাৎ যার উপরে হাত রেখে আমরা মানুষকে পরিচালনা করি।

স্ক্রল ওয়িল (Scroll Wheel):- মাউসের ওপরে থাকা গোল চাকার মতো দেখতে অংশটিতে আমরা স্লোলিং করার জন্য ব্যবহার করি।

অর্থাৎ কোন কিছু ওয়েব পেজ বা ডকুমেন্টস কে উপরের নিচে নিয়ে আসে জন্য স্লোলিং এর ব্যবহার করা হয় ।

ডান বোতাম (Right Button):- মাউসের বাম পাশে থাকা বোতাম টি ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন প্রাইমারি কাজ করে থাকি, যেমন কোন কিছু ফাইলকে ওপেন করা, ওয়েবসাইট বিভিন্ন অপশন কে ক্লিক করা।

এবং মিউজিক সহ বিভিন্ন ভিডিও প্লে ব্যবহার করার জন্য আমরা এই বাটনটি ব্যবহার করে থাকি।

বাম বোতাম (Left Button):- মোশার বাম পাশে থাকা বোতাম ব্যবহার করে বিভিন্ন কনটেক্সট মেনু নিয়ে আসা সম্ভব, যা ব্যবহার করলে আমরা বিভিন্ন অপশন দেখতে পাই।

সাইড বোতাম (Side Buttons):- সাধারণত মাউসে আমরা এই সাইট বোতাম না দেখতে পেলেও, বিভিন্ন অ্যাডভান্স মাউসের মধ্যে আমরা এই সাইট বোতাম দেখতে পাই।

এই বোতামগুলো ব্যবহারকারীকে সাধারণত ন্যাভিগেশন করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

ওপ্টিক্যাল সেন্সর (Optical Sensor):- যখন আমরা মাউসটাকে এক জায়গা থেকে অন্য এক জায়গায় নাড়াচড়া করি, সেটি নিচে থাকা সেন্সরের মাধ্যমে বা অপটিক্যাল সেন্সরের মাধ্যমে কম্পিউটারকে ইন্ট্রোডাকশন দেয়।

অতএব মাউসের মধ্যে থাকা অপটিক্যাল সেন্সরটি আমাদের মুভমেন্ট গুলোকে ক্যাপচার করে কম্পিউটারকে ইন্ট্রোডাকশন তে সহায়তা করে।

মাইক্রোপ্রসেসর:– মাউসের মধ্যে থাকা সমস্ত ধরনের মাইক্রো প্রসেসর মাউসের কন্ট্রোল করতে সহায়তা করে। এই মাইক্রোপ্রসেসর ছাড়া মাউস সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেনা কোন সময় কোন কাজটি করতে হবে।

সার্কিট বোর্ড:- কম্পিউটার সঙ্গে মানুষকে কমিউনিকেট করার জন্য। মাউসের ভিতরে থাকা ছোট বোর্ডটি কিবোর্ডটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সার্কিট।

অতএব মানুষের মধ্যে সার্কির বোট এর প্রধান কাজ হল কম্পিউটার সঙ্গে কানেকশন তৈরি করা, । এবং বিভিন্ন মুভমেন্ট গুলো ক্যাপচার করে প্রয়োজন অনুযায়ী ছোট ছোট মাইক্রোপ্রসেসর সহ বিভিন্ন সেন্সরের ছড়িয়ে দেওয়া।

মাউস কত প্রকার ও কি কি

বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের টেকনোলজির মাউস ব্যবহার হয়ে থাকলেও, যেটি সাধারণত কম্পিউটার ও ল্যাপটপে খুব বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে সেটি হলো USB মাউস।

যদিও এই মাউসয়ের আসল নাম হল অপটিকাল মাউস, তবে কম্পিউটারের সঙ্গে কানেক্ট করার জন্য usb পোর্টের ব্যবহার করা হয় বলে, সবাই একে ইউএসবি মাউস বলে।

অপটিক্যাল মাউস

এটি একটি উন্নত কম্পিউটার পয়েন্টিং ডিভাইস। যা মাইক্রোসফট কোম্পানির দ্বারা 1999 সালে এপ্রিল মাসের প্রথম মার্কেটে এসেছিল।

এটি সম্পূর্ণ লেজার বা লাইট-এমিটিং ডায়োড ব্যবহার করে কাজ করে থাকে। এবং অন্যান্য মাউসের তুলনায় এটি খুব দ্রুত কাজ করতে সক্ষম।

এবং এই অপটিক্যাল মাউস টি মার্কেটের আসার পূর্বে মাইক্রোসফট কোম্পানি দ্বারা বিভিন্ন জায়গায় টায়াল বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছিল।

এই ধরনের মাউস গুলি পরিষ্কার করার প্রয়োজন পড়ে না কারণ পুরোটাই কভার অবস্থায় থাকে। তাই মানুষের মধ্যে ধুলো আসার কোনো রাস্তায় থাকে না।

এবং এই ধরনের মানুষকে কেবলমাত্র দুটো বোতাম থাকে, এবং নিচে অথবা পেছনের দিকে একটি সেন্সর দেখা যায়। ও ওপরে একটি গোলাকার চাকা থাকে।

জয়স্টিক মাউস

জয়স্টিক মাউস হলো, খুব জনপ্রিয় একটি মানুষ গেমার দের কাছে। অর্থাৎ এটি প্রধানত ভাবে গেমের কথা ভেবে ১৯২৬ সালে সি.বি. মিরিক ইউএস নেভাল রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে প্রথম জয়স্টিক আবিষ্কার ও পেটেন্ট করেন।

এবং এটি সাধারণ মানুষের থেকে দেখতে একটু অন্যরকম হয়ে থাকে, এবং এই জয় স্টিক মাউস ব্যবহার করার জন্য আপনাকে দুটি হাতের ব্যবহার করতে হবে।

এবং তুলনামূলকভাবে এখানে বিভিন্ন বোতাম বিভিন্ন কাজের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে।

তবে অন্যান্য সাধারণ মানুষের মতো আপনি জয়স্টিক মানুষকে ইউএসডি পোর্টের মাধ্যমে কানেকশন করাতে পারবেন।

মেকানিকাল মাউস (বল মাউস)

এই মেকানিক্যাল মাউস বল মাউস নামক পরিচিতি, এই ধরনের মানুষ দেখতে কিছুটা অপটিক্যাল মাউসের মধ্যে হলেও,

এর কাজ ও ব্যবহার করার ধরণ সম্পন্ন আলাদা, এইরকম মানুষের নিচে একটি রবার্ট বা কোন একটা ধাতব জাতীয় গোলাকার আকৃতি বল থাকে,

এবং ওই বলের মধ্যে সেন্সর বা মুভমেন্ট ক্যাপচার করার ক্যাপাসিটি থাকে, আপনি যখনই মানুষটাকে নাড়াবেন,

তখন বলের ভেতরে থাকা সেন্সরটি, আপনারটি কম্পিউটারকে ইন্ট্রোডাকশন দেবে, । যদিও এই ধরনের মাউস ব্যবহার করা অতটা সহজ নয়।

এবং এইসব মানুষের একটি ভালো দিক হলো দীর্ঘস্থায়ী অর্থাৎ খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে।

কিন্তু কাজ করার গতি প্রায় ধীর সম্পন্ন হওয়ার জন্য, বর্তমানে এই সব ধরনের মাউস আর মার্কেটে দেখা যায় না।

ওয়্যারলেস মাউস

সাধারণত ভাবে কম্পিউটার সঙ্গে মানুষের সংযোগ করার জন্য তারের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু এই সমস্ত মানুষের কোন রকম তার দেখা যায় না।

অর্থাৎ ওয়্যারলেস মাউস, সম্পূর্ণ রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি কাজে লাগে কম্পিউটারকে বিভিন্ন মুভমেন্ট বা ইন্ট্রোডাকশন দিতে সক্ষম।

তবে এই ধরনের মানুষ ব্যবহার করার জন্য আপনার ব্যাটারির প্রয়োজন হবে, এবং তার পাশাপাশি আপনার কম্পিউটারের port এ একটি ইউএসবি রিসিভার লাগাতে হবে।

এবং এই রিসিভারটি বিভিন্ন ফ্রিকুয়েন্সির সাহায্য নিয়ে ওয়ারলেস মাউসের মুভমেন্ট টি কম্পিউটারের সেন্ড করবে।

টাচপ্যাড মাউস

টাচপ্যাড অতি উন্নতমানের একটি মাউস, এই ধরনের মানুষ আপনার পেশার সেনসিটিভ টেবিল নামে পরিচিত।

অর্থাৎ যখনই আপনি এই সমস্ত মাউসে যখন আপনি প্রেসার দিয়ে কিছু কাজকরার চেষ্টা করবেন, তখন অটোমেটিকলি প্রেসার সেনসিটিভ টেবিল টি কাজ করবে।

এবং এই ধরনের টাচপ্যাড মাউস সাধারণত ল্যাপটপে ব্যবহার হয়ে থাকে, এবং একই সঙ্গে আপনি মাল্টিপ্যাল কাজ এই টাচপ্যাড মাউসের সাজে করতে পারবেন।

লেজার মাউস

লেজার মাউসের সঙ্গে আমরা কম বেশি সবাই হলেও যথেষ্ট পরিচিতি রয়েছি। এই ধরনের মাউস অন্যান্য সাধারন মাউসের থেকে কুড়ি গুন পর্যন্ত বেশি সেনসিটিভ এবং নির্ভুলভাবে কাজ করার ক্ষমতা রাখে।

এবং এটি সম্পূর্ণ কাজ করে লেজার লাইটের উপরে, এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেনসিটিভ গ্রাফিক বা ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন অ্যাপ্লিকেশনে এই লেজার মাউস খুব বেশি ভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

অবশেষে

আমি আশা করব আপনাদের নিরাশ করিনি আজকের আর্টিকেলটি থেকে কারন আমি আপনাদের জানতে চেষ্টা করেছি- মাউস কি এবং কত প্রকার ও বিভিন্ন কাজ?

তবু যদি আপনাদের কোনরকম এই আর্টিকেল নিয়ে প্রশ্ন থেকে থাকে অবশ্যই আমাকে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।

Leave a Comment