রাজনৈতিক পরিস্থিতি
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তার ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পের ১৩৫০ বঙ্গাব্দের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের চিত্র তুলে ধরেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, ৪২ এর আন্দোলন যেমন মানুষের জীবনে অনভিপ্রত পরিবর্তন এনেছিল অন্যদিকে ঔপনিবেশিক শোষণ, আড়তদারের কালোবাজারে প্রভাব বাংলার গ্রাম জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল। ১৬ই অক্টোবর, ১৯৪২ এর সাইক্লোন, বন্যার তান্ডব ব্রিটিশের যুদ্ধকালীন ‘পোড়ামাটির নীতি’সব মিলে সেদিনের দুর্ভোগে বাংলার চূড়ান্ত বিশৃংখল পরিস্থিতি সম্মুখীন হয়েছিল।
সামাজিক পরিস্থিতি
সামান্য খাবারের সন্ধানে দলে দলে মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরে আসে। সরকারি লঙ্গরখানা, ফুটপাথের ভিক্ষান্ন, ডাস্টবিনের উচ্ছিষ্ট সে সমস্ত অগণিত নিরন্ন মানুষের খিদে মেটাতে ব্যর্থ হয়েছিল। শহরের ফুটপাথে অনাহারে মানুষ মরেছে। তা সত্ত্বেও উদাসীন উচ্চবিত্ত বা স্বার্থপর মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রতিবাদ করেনি। নিজেদের দাবি নিয়ে বিক্ষোভ দেখাইনি নিরন্ন মানুষগুলিরও
মৃত্যুঞ্জয় ও তার পরিণতি
এমন পরিস্থিতিতে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুঞ্জয় একজন সংবেদনশীল মধ্যবিত্ত। এক সময় উদাসীন থাকলেও চোখের সামনে দেখা ‘অনাহারে মৃত্যুর’প্রভাব এড়িয়ে যেতে পারেনি সে। ক্রমশ আত্মযন্ত্রণা সুস্থ স্বাভাবিক মৃত্যুঞ্জয়ের অন্তর্বায়ন বদলে দিয়েছে। নানা প্রচেষ্টা করেও সে নিরন্ন মানুষের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি, তাই শেষ পর্যন্ত নিজে তাদের একজন হয়ে উঠেছে।
উপসংহার
এখানে মৃত্যুঞ্জয় সেই সমস্ত অসহায় মানুষের প্রতীক যারা সামান্য ক্ষমতার লড়াই করে চলেছে অদৃষ্টের সঙ্গে। নিখিলের যুক্তিবাদ, বাস্তবতা তাকে প্রতিহত করতে পারেনি। যখন ভালো থাকার সমস্ত উপায় অদৃশ্য হয়েছিল মজুতদারদের গুদামে, তখন ধনতন্ত্রের বিজ্ঞানগ্রস্ত রূপ দেখে এক সংবেদনশীল-কর্তব্যপরায়ণ মানুষের অনিবার্য পরিণতি এমনই হওয়ার ছিল। লেখক এখানে আকালের পরিস্থিতি এবং পরিণতি নিখুঁতভাবে গল্পের অবয়বে জুড়ে দিয়ে তৎকালীন সমাজ বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তুলেছেন।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পটির প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ?
মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে মৃত্যুর প্রথম সাক্ষাৎ কখন হয়েছিল ?
অপিস যাবার পথে মৃত্যুঞ্জয় প্রথম কি দেখল ?
ছোট গল্প হিসেবে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পটির কতখানি সার্থক, আলোচনা করো ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র আলোচনা করো ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্প অবলম্বনে মৃত্যুঞ্জয় স্ত্রী তথা টুনুর মা-এর চরিত্র আলোচনা করো ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ছোট গল্প অবলম্বনে নিখিল চরিত্রটি পর্যালোচনা করা ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পে লেখকের মানবদরদি মানসিকতা কিভাবে ফুটে উঠেছে, তা আলোচনা করো ?
“একটু অবজ্ঞার সঙ্গে ভালও বাসে” -কে , কাকে, কেন পছন্দ করত বা ভালোবাসত ?
“এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কি ?” -কোন অপরাধের কথা বলা হয়েছে ? বক্তা কেন নিজেকে অপরাধী মনে করেছেন?
“দরদের চেয়ে ছোঁয়াচে কিছু নেই এ জগতে” -কোন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে? এমন বলার কারণ কি?
“এভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না।” -কে, কেন এবং কিভাবে দেশের লোককে বাঁচাতে চায় ?
‘শহরের আদি অন্তহীন ফুটপাথ ধরে সে ঘুরে ঘুরে বেড়ায়।’ – ‘ঘুরে ঘুরে’ সে কি দেখে এবং কি উপলব্ধি করে?
“তার অভিজ্ঞতার কাছে কথার মারপ্যাঁচ অর্থহীন হয়ে গেছে।” -কারো অভিজ্ঞতা? এমন বলার কারণ কি