ভিন্ন প্রকৃতির শিশুদের শিক্ষার সমস্যাগুলি কী কী?

শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক ইত্যাদি দিক থেকে যেসকল শিশুরা অন্য সমস্ত শিশুদের থেকে ভিন্ন বা আলাদা, ত্রুটিমুক্ত, এদেরকে বলে ভিন্ন প্রকৃতির শিশু, ব্যতিক্রমী শিশু (Differently abled Children, Exceptional Children)।

ভিন্ন প্রকৃতির শিশুদের সমস্যা

(১) সঙ্গতিবিধান: ভিন্ন প্রকৃতির শিশুরা পরিবেশের সঙ্গে, পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের সঙ্গে সঙ্গতি বিধান ব্যর্থ হয়।

(২) হীনম্মন্যতা : এই সকল শিশুরা আর পাঁচ জন শিশুদের মতন স্বাভাবিক না হওয়ায় নিজের সকলের থেকে দূরে রেখে হীনম্মন্যতায় ভোগে।

(৩) অভিভাবকদের উদাসীনতা : বেশিরভাগ অভিভাবক তাদের প্রতিবন্ধী সন্তানদের ভবিষ্যৎ জীবন সম্বন্ধে সচেতন নন। তারা তাদের প্রতিবন্ধী সন্তানদের শিক্ষার বিষয়ে উদাসীন থাকেন।

(৪) আবেগপ্রবণ : ভিন্ন প্রকৃতির শিশুরা অন্যান্য শিশুদের তুলনায় বেশি আবেগপ্রবণ হওয়ার কোনো বিষয় খুব সহজে গ্রহণ করতে অক্ষম।

(৫) অর্থের অভাব : প্রতিবন্ধী শিশুদের বিশেষ শিক্ষার আয়োজন করার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তার জোগান ঠিকমতো না থাকায় শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়।

(৬) আক্রমণাত্মক : এরা এদের চাহিদার অভাব হলে, নিরাপত্তা অনুভব না করলে, ভয়, রাগ হলে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে যা সমস্যা ২ তৈরি করে, তখন এরা আঘাত করে।

(৭) বিদ্যালয়ের অভাব : আমাদের দেশে যে পরিমাণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আছে তাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য উপযুক্ত সংখ্যক বিদ্যালয় নেই। ফলে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে।

(৮) শিক্ষা সহায়ক উপকরণের অভাব : প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা সহায়ক উপকরণের দরকার। এইসকল উপকরণগুলির সঠিক জোগান না হলে সমস্যা তৈরি হয়।

(৯) শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব : প্রতিবন্ধী শিশুদের বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে শিক্ষাদান করার জন্য যে পরিমাণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার প্রয়ােজন, সেই পরিমাণ শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে।

(১০) নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য : এদের মধ্যে পলায়ণপ্রবণতা, বদমেজাজ, একগুঁয়েমি, হিংসা, মিথ্যা কথা বলা ইত্যাদি নেতিবাচক মনোভাব দেখা যায়।

(১১) পারিপার্শ্বিক প্রতিবন্ধকতা : প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের জন্য পারিপার্শ্বিক প্রতিবন্ধকতা একটি বড়াে সমস্যা। প্রতিবন্ধী শিশুদের সমাজের বেশিরভাগ মানুষ ভালো চোখে দেখে না। এদের শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ তথা সমাজের অবহেলা শিক্ষাকে স্বার্থক করে তুলতে পারে না।

(১২) চিকিৎসার অভাব : দৈহিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার প্রয়োজন। সময়মতো চিকিৎসা করলে শারীরিক সুস্থতা বজায় থাকে। আবার প্রতিবন্ধকতার মাত্রা আংশিক হলে অনেক সময় সুফল পাওয়া যায়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় ঠিক সময়ে ডাক্তার দেখানো হয় না , ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে বাধা পড়ে।

(১৩) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব : প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপযােগী শিক্ষাদানের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার যথেষ্ট অভাব রয়েছে যা এদের শিক্ষাদানের জন্য মস্ত বাধা। যেমন— ব্রেইল। পদ্ধতিতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পাঠদান।

পরিশেষে বলা যেতে পারে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার জন্য পরিবার, সমাজ, পিতা-মাতা, শিক্ষক-শিক্ষিকা কেউই সচেতন নন। তাই এই সমস্ত শিশুদের শিক্ষার ব্যাপারে সকল কে সচেতন ও আন্তরিক হতে হবে।

এইরকম Question answer পাওয়ার জন্য আমাদের website visit করুন

দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষা বিজ্ঞানের(education) সব প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment