ভূমিকা
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পটিতে থুত্থুরের কুঁজো বুড়ি, চৌকিদার, মোল্লাসাহেব ও ভটচাজমশাই নামহীন এক চরিত্র গুলি কিছুটা মান্যতা পেলেও নামযুক্ত চরিত্র-চা ওয়ালা জগা, নকড়ি, নাপিত, নিবারণ বাগদী, ফজলু শেখ এবং করিম ফরাজি চরিত্র বলি অপ্রধান বা গৌণ চরিত্রের রূপ পায়।
চা ওয়ালা জগা
গল্পে বর্ণিত বাজারে মোট তিনটি চা দোকানের একটি জোগার। লেখক যাকে ‘চাওলা’ বলে উল্লেখ করেছেন। নিদারুণ প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখানেই কর্ম বিরতি সুযোগে গা গঞ্জের লোকেরা আড্ডা দিচ্ছিল। বুড়ি ও এখানে চা পান করে, দুরস্ত বটগাছের কর্দমাক্ত খোঁদলে রাতের আশ্রয় নেয়। পরদিন দুর্যোগ সরে গিয়ে রোদ উঠলে বুড়িকে সেখানেই মৃতবৎ করে থাকলে দেখলে অভিজ্ঞ জগা, সকলের উদ্দেশ্যে বলছিল- ‘নির্ঘাত মরে গেছে বুড়িটা নকড়ি নাপিতের পেশা ক্ষৌরকর্ম করা। ঘটনার দিন বুড়ির দেহ নিয়ে হিন্দু-মুসলমানের দ্বন্দ্ব শুরু হলে ভটচাজমশাই স্বপক্ষে নকড়ি এগিয়ে এসেছিল। তার বক্তব্য সে ক্ষৌরকর্ম করতে যখন বটতলায় গিয়েছিল তখন বুড়ি আপনমনে ‘হরিবল’ বলছিল, সুতরাং সে হিন্দু।
ফজলু শেখ
ফজলু মুসলমান, নকড়ির বুড়িকে হিন্দু প্রমাণের চেষ্টা তাই সে সহ্য করতে পারেনি। নকড়ির বক্তব্যকে উড়িয়ে দিয়ে তাই সে বলে -‘ভুল শুনেছ!’ সে নাকি স্বকর্ণে শুনেছে, বুড়ি বলছিল -‘লাইলাহা ইল্লাল্লা।’
নিবারণ বাগদি
নিবারণ রাগী লোক, একদা সে ছিল দাগি ডাকাত। সুতরাং ফজলু শেখের তরপানি তার পছন্দ হয়নি। তাই ফজলুর কথা কে ভিত্তিহীন প্রতিপন্ন করে এসেছে উঠে বলছিল-‘মিথ্যে’!
করিম ফরাজি
করিম একটা পেশাদারী লাঠিয়ার, কিন্তু ইদানিং খুব নামাজ পড়ে হয়েছে ‘বান্দা’ মানুষ। সুতরাং নিবারণের চেঁচানি সে মেনে নিতে পারেনি। গলার স্বর তাই তার নিবারণের চেয়েও প্রখর হয়ে ওঠে। চিৎকার করে সে প্রতিবাদী ভঙ্গিতে বলে-‘খবরদার!’
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর