‘ভারতবর্ষ’ গল্পনুসারে হিন্দু-মানবপ্রীতির পরিচয় পাওয়া যায় কিনা তার স্বপক্ষে তোমার মতামত ব্যক্ত করো?

ভূমিকা

‘ভারতবর্ষ’ গল্পটিতে লেখক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ একদিকে যেমন হিন্দু-মুসলমানের পারস্পরিক ভেদ বিভেদের দ্বন্দ্বময় দিকটিকে তুলে ধরেছেন, অন্যদিকে তেমনি ভেদ বিভেদের উর্ধ্বে উঠে মানবতার পথে প্রবাহিত হওয়ার পথ নির্দেশ ও করেছেন।

গল্পের প্রথমাংশে দেখা যায়, পৌষের চরমতম প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রেক্ষিতে গ্রামের মানুষজন একটু উত্তাপের খোঁজে বাজারের চা দোকানে জোড় হয়েছে। যার মধ্যে উপস্থিত হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। কোন বৈরী ভাব নেই, অসম্প্রীতি নেই। চায়ের কাপে আলাপ আলোচনার তুফান ওঠে, আড্ডা চলে, প্রসঙ্গ বদলে যায় প্রসঙ্গাতরে। লেখক তার রসোত্তীর্ণ ভাষায় এখানে প্রোথিত করেন মানব প্রীতির বীজ।

দৃশ্যপথ পরিবর্তন

কিন্তু গল্পে এটাই শেষ কথা নয়। পরক্ষণেই দেখা যায় কত তুচ্ছ কারণে মানবপ্রীতি বদলে যায় অসম্প্রীতিতে। বাজারে চা দোকানে এক থুথুড়ে বুড়ি চা খেতে এলে চা দোকানে মানুষ তাকে নিয়ে কৌতুহলী হয়। পরদিন বট গাছ তলায় বুড়িকে নিথর ভাবে পড়ে থাকতে দেখে সকল কল্পনা করে নেয় সে মৃত। তাই নিয়ে হিন্দু-মুসলমানের শুরু হয় ধর্মীয় দ্বন্দ্ব, যা পরবর্তী সময়ে হয়ে ওঠে সংঘর্ষ। যেখানে মানবপ্রীতির গন্ধমাত্র নেই, বরং বদলে আছে প্রবল বিদ্বেষ ও বিষোদগার।

সম্পর্কে মত

‘ভারত বর্ষ’গল্পের শুরুতেই মানবপ্রীতির সন্ধান করেছেন লেখক, যা প্রোথিত দেখা যায় চায়ের দোকানে। যেখানে ধর্ম নেই, দৈন নেই, মনের মালিন্য ও নেই, আছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটু উত্তাপ সন্ধানের প্রচেষ্টা। এই উত্তাব জীবনেরই, যাব প্রীতির মধ্য দিয়ে মানুষের মানুষের সেতু নির্মাণ করে। কিন্তু গল্পের সমাপ্তিতে ভিন্ন দৃশ্য দেখা যায়, মানব প্রীতির পরিবর্তে সেখানে চোখ পড়ে সম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বের ছবি।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment