অন্নের প্রাচুর্য
‘ভাত’ গল্পে লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী সচেতনভাবেই বড়োবাড়ির আড়ম্বরের পাশাপাশি বাদার বাস করা অন্মাত্যজনুষের জীবনযাত্রার কঠিন এর কাহিনী বলেছেন। বড় বাড়িতে ৮২ বছরের বৃদ্ধের দীর্ঘায়ু কামনায় যে যোগ্য হয়, তার জাঁকজমক এর কাছে হতবাক হয়ে যায় অনাহারি উচ্ছব। 18 টি দেবত্র বাড়ি ও বাধা অঞ্চলের ওসাগর জমির মালিক বড় বাড়ির কর্তারা। রোজ তাদের জন্য আলাদা আলাদা ঝিঙেশাল, রামশাল, কনকপানি, পদ্মজালি ও মোটা সাপটা চালের ভাত হয়। স্বামী মারা গেলে বৃদ্ধাগৃহিনী মাছ খেতে পারবেন না। তাই তার জন্য ইলিশ, পোনা, চিতল, ট্যআংরআ, ভেটকির নানা পদের ব্যবস্থা করা হয়। বড় বাড়ির আরামপ্রিয়, আসল ছেলে না নিশ্চিত হয়ে বেলা 11 টা পর্যন্ত ঘুমায়। বুড়োকর্তার মৃত্যু হলে, তার শেষ যাত্রায় খই, ফুল, ধুতি, শববস্ত্র,বোম্বাই খাট, কীর্তন দল, পেশাদারী শববাহকের মহাসমারোহ শুরু হয়।
বুভুক্ষ অন্নের অন্বেষণ
অন্যদিকে বাধা অঞ্চলে মাতলার বন্যায় অসহায় দরিদ্র মানুষের অড়ন্বর মৃত্যু ঘটে। ভিটেমাটি, পরিবার পরিজন ছাড়াও মাতলার গর্ভে চলে যায় উচ্ছবের সরকারের কাছে জমি চেয়ে করা দরখাস্তের নকল পত্র। দরিদ্র কৃষক উচ্ছব বন্যায় ভেসে যায় স্ত্রী পড়তে খুঁজতে খুঁজতে হারিয়ে ফেলে সরকারি বদন্যতটুকুও। বাসিনির সাহায্যে বড় বাড়িতে কাজের বিনিময়ে খাদ্যের ব্যবস্থা হলেও, খাদ্য তার জোটেনি। উচ্ছব জানে তার বাদাই কেবল গেঁড়ি-গুগলি, কচু শাক, সুশনো শাক, কিন্তু বড় বাড়ির অপর্যাপ্ত ধনের উৎস ‘বাদা’ শুনে কৌতূহলী হয় সে। ভাতের গন্ধে উচ্ছব খিদে জেগে উঠলেও সে ভাত পায় না। বুড়ো কর্তার মৃত্যুর জন্য অশৌচের বাড়ি থেকে সব ভাত ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা হলে হিংস্র হয়ে উঠে উচ্ছব। ভাতের ডেজকি নিয়ে পালিয়ে যায় উচ্ছব, তারপর প্রাণ ভরে ভাত খেয়ে এসে স্বর্গ সুখ পায়। সে স্বপ্ন বাদার ভাত খেতে খেতে আসল বাদাটার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন। শুধু নিজের জন্যই নয়, তার মত দিনদরিদ্র অভুক্ত মানুষেরদেরও সন্ধান দেবে সে বাদার অর্থাৎ মানুষের মতো করে বেঁচে থাকার সঠিক ঠিকানা।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর
ছোটগল্প হিসেবে ‘ভাত’ কতদূর সার্থক হয়েছে তার বিচার করো?
‘ভাত’ গল্পে লেখিকার ভাষায় নৈপুণ্যের পরিচয় দাও ?
‘ভাত’ গল্প অবলম্বনে উচ্ছব নাইয়া চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো?
‘ভাত’ গল্প অবলম্বনে বুড়ো কর্তার চরিত্র বিশ্লেষণ করো
‘ভাত’গল্পে বাসিনী চরিত্রটি আলোচনা করো?
‘ভাত’ গল্প অবলম্বনে বড় বাড়ির আড়ম্বর আভিজাত্যের পরিচয় দাও।
‘ভাত’ গল্পে ভাত একটি প্রতীক হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে।- আলোচনা করো?
“এ সংসারে সবকিছুই চলে বড় পিসিমার নিয়মে।”-বড়ো পিসিমা কে? গল্পে তার চরিত্রের কি পরিচয় পাওয়া যায়?
“সেই জন্যই হোম যোগী হচ্ছে।”- ‘হোম-যজ্ঞি’ হওয়ার কারণ কি? এই যজ্ঞের আয়োজন এর বর্ণনা দাও?
“পিসিমা দেখতে পেলে সর্বনাশ হবে।” -এ কথা কে কাকে বলেছে? পিসিমা দেখতে পেলে ‘সর্বনাশ’ হবে কেন?
“কপালটা মন্দ তার। বড়োই মন্দ।” -যার সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে তার কপালটা মন্দ কেন?
“উচ্ছবের হঠাৎ মনে হয় কলকাতায় গিয়ে খেয়ে মেখে আসি।”- উচ্ছবের হঠাৎ এরকম মনে হওয়ার কারণ কি ?
“লক্ষ্মী না আসতে সেধে ভাসান যাচ্ছে” -উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো?
“উচ্ছব কৌটোটা চেয়ে এনেছিল।” -কোন কৌটোর কথা বলা হয়েছে? কৌটোটা কেমন ছিল? সেই কৌতুক থাকলে কি হবে?
“গরিবের গতর এরা শস্তা দেকে।” -বক্তা কে? এ বক্তব্যের কারণ কি?
“তুমি কি বুঝবে সতীশবাবু!” -সতীশবাবু কি বুঝবে না? সতীশবাবু উচ্ছবের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছিল?
“অন্ন লক্ষী, অন্ন লক্ষী, অন্নই লক্ষী, ঠাগমা বলত।”-বক্তার এই উপলব্ধির কারণ ব্যাখ্যা করো?
বড় বাড়ির যজ্ঞের আয়োজন ও কর্তা মহাশয়ের শবযাত্রার আয়োজন নিজের ভাষায় লেখ?