দেশীয়ভাবে অদ্ভুত এবং প্রধানত পল্লীর লোকেদের নিজস্ব উদ্ভাবিত ক্রীড়া লোক ক্রিড়া। শরীরচর্চা, চিত্ত বিনোদন, অবসর যাপন ইত্যাদি কারণে লোক ক্রীড়ার চর্চা বহু প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসছে। বাঙালির লোক ক্রীড়াকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়- (১) স্থলভাগের খেলা (২) জলভাগের খেলা (৩) অন্তরীক্ষের খেলা।
স্থলভাগের খেলা
স্থলভাগের খেলার মধ্যে ‘অ্যাঙ্গা -অ্যাঙ্গা’, ‘এক্কাদোক্কা’, ‘করি খেলা’, ‘কানামাছি’, ‘গুলি খেলা’, ‘চিক্কা’, ‘ঘুটি খেলা’ইত্যাদির নাম করা যায়। স্থলভাগে খেলার মধ্যে বিভিন্ন পশু পাখির খেলা যেমন -মোরগ লড়াই, সাপের খেলা ইত্যাদি প্রধান্য পায়।
জলভাগের খেলা
জলভাগের খেলার মধ্যে ‘ঝাপপুরি খেলা’, ‘নৌকা বাইচ’, ‘পানি ঝুপ্পা’, ‘লাইখেলা’, ‘সাঁতার’, ‘হোল্ডুগ’ ইত্যাদি নামকরা যায়। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবাংলায় এই খেলা গুলির নানা নামে পরিচিত।
অন্তরিক্ষের খেলা
এই প্রকার খেলার মধ্যে কাবুতর বা পায়রা ওড়ানো ও ঘুড়ি ওড়ানো প্রধান। লোকক্রীড়া ব্যাপ্ত ক্রীড়া গুলি ভারতবর্ষের বাইরে ও যথেষ্ট প্রসিদ্ধ লাভ করেছিল।
লোকক্রীড়ায় সমাজ দর্শন
লোকেরা যেহেতু সমাজবদ্ধ ক্রীড়া, তাই এই খেলার মাধ্যমে পল্লী বাংলার নানা সমাজ দর্শন ফুটে ওঠে। পারস্পরিক সহাবস্থানের ফলে জন্মায় ঐক্যবোধ। শারীরিক কস রাতের মাধ্যমে তাই দেহচর্চারও সৌষ্ঠব প্রদর্শন করা যায়।
শেষ কথা
বাঙালির লোক ক্রীড়া চর্চা ইতিহাস ধরে হাঁটলে উঠে আসে মানুষের নৈতিকতা ও দলগত ঐক্যের ছবি। পরবর্তীকালে হিন্দু মেলায় তাই কুস্তি, লাঠি খেলা, বিয়াম অন্যান্য দেহচর্চা প্রদর্শিত হতে দেখা যায়।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর