বাংলা গানের ধারায় মঙ্গল কাব্য গুলি ভূমিকা আলোচনা করো?

জনপ্রিয় সাহিত্য কীর্তি

পঞ্চদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত ৪০০ বছর বিস্তৃত বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের মধ্যযুগের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্য কীর্তি হল ‘মঙ্গলকাব্য’। রবীন্দ্রনাথ মঙ্গল কাব্যগুলি সম্পর্কে লিখেছেন -“এই মোবাইল কাব্য গুলির মধ্যেই বাংলা কাব্য ভাষার প্রথম আত্মপলদ্ধির অভিব্যক্তি দেখা দিয়েছে।”‌ মঙ্গলকাব্য গুলি গীত এর আকারে একটা দীর্ঘ সময় বাংলাদেশের জনমানসে গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল।

বৈশিষ্ট্য

দেব দেবীর মাহাত্মক সূচক এবং ভক্তের বা শ্রোতার মঙ্গল বিধায়ক মঙ্গল কাব্যগুলি আট দিন ধরে গান। সমাজের বিভিন্ন মঙ্গল অনুষ্ঠানে এই গান গাওয়া প্রচলন ছিল। বহু রাগ রাগিনির উল্লেখ মঙ্গল কাব্যে পাওয়া গেলেও, অন্তরা, সঞ্চারী, আভোগক ইত্যাদিভাগে বিভক্ত নয়। কৌশিক কি বোটা রাগে বিলম্বিত হয়ে ‘লাচারি’ নামক লৌকিক ছন্দে মঙ্গল কাব্য গুলি গীতি হত। মূলত 1600 টি পালায় বিভক্ত এই আখ্যায়িকা কাব্য গুলি গাওয়া হত পাঁচালীর ভেঙে।

ভূমিকা

মনসামঙ্গল, চন্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল,-এই তিনটি প্রধান মঙ্গল কাব্য ছাড়া ষষ্ঠীমঙ্গল, শীতলামঙ্গল, সূর্য মঙ্গল, শিব মঙ্গল, দূর্গামঙ্গল ইত্যাদি অপ্রধান মঙ্গল কাব্যের ব্যাপক প্রসার প্রমাণ করি মঙ্গল গান শেখালে জনমানসে প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিল। পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে মনসাকে নিয়ে নানার রূপ মহাত্মক সূচক ও রূপকথা বিষয়ক একরকম কাব্য গীতি দল বেঁধে গাওয়ার প্রচলন শুরু হয়েছিল। বর্তমানে সময় ও মনসামঙ্গল গীতি, শীতলা মঙ্গল গীতি যথাক্রমে মনসা ও শীতলা পূজার অঙ্গ হিসেবে স্বীকৃত। মঙ্গলকাব্য গুলি গান শুধু দেবতার মহাত্মক কথা হয়েই থাকেনি, তা বৃহত্তর সময় ও সমাজের গোপন ইতিহাস হয়ে ও মানুষের মনে স্থান করে নিতে পেরেছে বলে বাংলা গানের ইতিহাস মঙ্গলকাব্য গুলির গুরুত্ব অমিলন হয়ে থাকবে চিরকাল।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment