বাংলাদেশের সুলতানি আমলের চিত্রকলার পরিচয় দাও ?

সুলতানি আমলের চিত্রকলা

একাদশ শতকে দ্বিতীয় ভাগে পৌরাণিক ব্রাহ্মণ ধর্মের অনুগামী সেন ও বর্মন রাজাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা চরম নিগৃহীত হয় এবং পাল রাজাদের পরম ধর্ম সহিষ্ণুতার নির্দেশন শিল্প-স্থাপত্য-চিত্র-ভাস্কর্য ক্রমশ বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যায়। ত্রয়ওদশ শতকের সূচনায় তুর্কি আক্রমণের ফলে বাংলার মূর্তি ও চিত্রকলার অনুশীলন সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়।

সামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহের নেতৃত্বে বাংলায় সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পরবর্তীকালের হুসেন শাহের শাসনকালে তা আরো বিস্তৃত লাভ করে। বাংলার স্থাপত্য শিল্পে গ্রামীণ লোকসিত্র তৈরীর কাজে ভারতীয় সুলতানি স্থাপত্যের বাংলার স্থাপত্য শিল্পে গ্রামীণ লোকসিত্র তৈরীর কাজে ভারতীয় সুলতানি স্থাপত্যের প্রভাব পড়ে। চিত্রকলার আপত্তি থাকলেও লোকচিত্র সৃষ্টির গ্রাম বাংলার পটচিত্রে পাওয়া যায়। চতুর্দশ শতকের শেষ বা পঞ্চদশ শতকে শুরুতে সুলতানদের দরবারে নতুন এক ধারার অনুচিত্রের অনুশীলন শুরু হয়, যার উৎস হলো পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ার পারসরিক বা ইরানীয় পান্ডুলিপি চিত্রকলা।

গৌড়ের সুলতান নসরৎ শাহের দরবারেও এই চিত্রশিল্পের ধারার প্রভাব পড়েছিল। বলাবাহুল্য, নিজামি রচিত ‘ইসকন্দরনামা’ গ্রন্থের যে কফি হাদিম খান সুলতান নসরৎ খানের জন্য করেছিলেন, তাতে পারসিক চিত্রকলার এক পরিণত ঐতিহ্য লক্ষ্য করা যায়। সেই চিত্রকলার সঙ্গে বাংলার চিত্রকলার এক বিশেষ সমন্বয় দেখা যায়। এদেশীয় কারিগরদের শিল্পকলার দক্ষতা অনেক সাক্ষ্য ছড়িয়ে আছে গৌড়ের মসজিদ ও ও সমাধি সৌদে পরামাটির ইট ও টালির ওপর অলঙ্করণে। মুঘল চিত্রকলা ওরঙ্গজেবের আমলে চূড়ান্ত বিপর্যস্ত হলে মুঘল চিত্রকারীরা জীবিকার সন্ধানে কেউ কেউ বাংলা তথা মুর্শিদাবাদে চলে এলে বাংলার চিত্রকলা আরো সমৃদ্ধ হয়।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment