“ফিরে এসে সবাই দিগন্তে চোখ রাখল ঝাঁকে ঝাঁকে কখন শকুন নামবে?” -সকাল থেকে কি কি ঘটনা ঘটেছিল তার বিবরণ দাও? সবাই এমনটা কেন করেছিল?

ঘটনাবলির বিবরণ

‘ভারতবর্ষ’ গল্পে এক অসহায় থুরথুরে রাক্ষসী চেহারার বুড়ির কথা আছে। রাঢ়বঙ্গের পৌষের এক অকাল দুর্যোগে ওই বৃদ্ধা আশ্রয় নিয়েছিলেন গ্রাম সংলগ্ন ছোট বাজারের অদূরে এক বটগাছের তলায় কর্দমাক্ত খোঁদলে। বুড়ির অবস্থাটাই ছিল মরমর। পরদিন সকালের দুর্যোগ মুক্ত রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশে তাই তাকে যখন নিঃসাড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেল, বেলা গড়িয়ে গেল ও বুড়ি যখন নড়লো না, তখন সমবেত জনতার মধ্যে চা ওয়ালা জগা, মুক্তকণ্ঠে ঘোষণা করল -“নির্ঘাত মরে গেছে বুড়িটা।” জগার ঘোষনা শুনে একজন বুদ্ধিমান বলল-সর্বনাশ, তাহলে যে শেয়াল কুকুরে ছিঁড়ে খাবে, গন্ধে টেকা যাবে না। ভিড় বাড়ল। বিজ্ঞজনেরা বুড়ির কপাল ছুঁয়ে দেখল-খুব ঠান্ডা। কেউ নাড়িয়ে দেখল-স্পন্দনহীন। সুতরাং বুড়ি মড়াই বটে। সরকারি আইন রক্ষক চৌকিদারকে খবর দেওয়া হল। ব্যাপার বুঝে তার পরামর্শ, থানায় খবর না দেওয়াই ভালো, কারণ-“ফাঁপিতে এক ভিকিরি পটল তুলেছে, তার আবার থানা পুলিশ !” তাছাড়া পাঁচ ক্রোশ দূরে থানায় খবর দিলেও পুলিশ আস্তে রাত দুপুর। বাসি মরা, গন্ধ ছুটবে। সুতরাং চৌকিদার পরামর্শ দিলে বুড়িকে-“নদীতে ঢেলে দিয়ে এসো! ঠিক গতি হয়ে যাবে-যা হবার!” মাঠ পেরিয়ে দু মাইল দূরে নদীর চড়ায়, বাসের চ্যাংদোলায় ঝুলিয়ে, চ্যাংদোলা সহ গুড়িকে ফেলে দিয়ে আসা হলো। উজ্জ্বল রোধে তত্ত্ব বালিতে বুড়ির দেহ উচিত হয়ে পড়ে রইল।

এমন আচরণের কারণ

নদীর চড়ায় বুড়িকে ফেলে এসে সবার মনে একটা কৌতুহল। বুড়িকে দাহ করা বা কবর দেওয়া হয়নি। তা অবশ্যই তার পরিত্যক্ত দেহ ছিড়ে খেতে ঝাঁকে ঝাঁকে শকুন নেমে আসবেই। এটাই অনুমান। কিন্তু কখন তাই তারা দেখতে ‘দিগন্তে’ চোখ রেখেছিল।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment