পুনর্যৌবন লাভ বলতে কী বােঝ? ডেভিসের ক্ষয়চক্র ধারণার যৌবন অবস্থার বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করাে। নদীম কীভাবে গড়ে ওঠে?

পুনর্যৌবন লাভ

(১) নদীর পুনর্যৌবন লাভ : সমুদ্রপৃষ্ঠের অবনমন ঘটলে অথবা ভূপৃষ্ঠের উত্থান ঘটলে নদীর ক্ষয় করার ক্ষমতা বেড়ে যায় তখন সেই অবস্থাকে নদীর পুনর্যৌবন লাভ বলে।

(২) ভূমিভাগের পুনর্যৌবন লাভ : ভূমিরূপের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে নদী পুরােনাে ভূমিভাগের ওপর নতুন উদ্যমে নিম্নক্ষয় শুরু করে। এর ফলে সমপ্রায় ভূমিরূপের ওপর যৌবনােচিত ভূমিরূপ অধ্যারােপিত হয়, একে ভূমিভাগের পুনর্যৌবন লাভ বলে।

ডেভিসের ক্ষয়চক্র ধারণার যৌবন অবস্থার বৈশিষ্ট্য

ভূমির উত্থান পর্ব শেষ হওয়ার পর থেকেই ভূমিরূপের যৌবন অবস্থা শুরু হয়। এই সময় থেকেই নদী ক্ষয় করতে শুরু করে। এই পর্যায়ে ভূমিভাগ যেসব বৈশিষ্ট্য লাভ করে সেগুলি হল─ (i) এই পর্যায়ে ভূমির প্রারম্ভিক ঢাল অনুযায়ী কতকগুলি অনুগামী নদী ও উপনদীর সৃষ্টি হয়। উপনদীগুলি মস্তক ক্ষয়ের মাধ্যমে প্রসারিত হয়ে বৃক্ষরূপী জলনির্গম প্রণালী গড়ে তােলে। (ii) সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভূমির উচ্চতা সর্বাধিক হওয়ায় নদী নিম্নক্ষয়ের মাধ্যমে গভীর ও সংকীর্ণ ‘v’ আকৃতির উপত্যকা গঠন করে। (iii) এই পর্যায়ে প্লাবনভূমি সাধারণত সৃষ্টি হয় না। তবে প্রধান নদী উপত্যকায় উথানকালের চিহ্ন থাকতে পারে। (iv) দুটি অনুগামী নদীর অন্তর্বর্তী অঞ্চল প্রশস্ত হয় এবং এই অংশে জলনির্গম প্রণালী উন্নত না হওয়ায় জলাভূমি ও হ্রদ অবস্থান করতে পারে। (v) এই অঞল পর্যায়ক্রমে কঠিন ও কোমল শিলায় গঠিত হওয়ায় প্রধান নদী বরাবর জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়। পরিণত অবস্থায় পৌঁছানাের আগেই এগুলি অন্তর্হিত হয় এবং নদীবক্ষ পর্যায়িত অবস্থায় পৌঁছােয়। (vi) এই পর্যায়ের শেষের দিকে দুই নদীর অন্তর্বর্তী অংশ সংকীর্ণ ও তীক্ষ্ম হয়। এর শীর্ষদেশে আদি শিলার অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। (vii) নদীর নিম্নক্ষয়ের কারণে এই পর্যায়ে নদী উপত্যকার তলদেশ ও শৈলশিরার শীর্ষদেশের মধ্যে আপেক্ষিক উচ্চতা সর্বাধিক হয়।

নদীমঞ্চের গঠন

নদী উপত্যকায় অনেক সময় নদীর দু-পাশে এক বা একাধিক ধাপ বা মঞ্ দেখা যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের ঋণাত্মক পরিবর্তন, জলবায়ুর পরিবর্তন (মরু জলবায়ু থেকে আর্দ্র জলবায়ুতে পরিবর্তন) ইত্যাদির কারণের ফলে নদীর জলপ্রবাহের মাত্রা বেড়ে গেলে নদী নিম্নক্ষয়ের মাধ্যমে পুরাতন উপত্যকার ওপর উল্লম্বভাবে কেটে বসে যায়। ফলে নদীর উভয় পার্শ্বে পরিত্যক্ত মৃদু ঢালবিশিষ্ট উপত্যকা নবীন উপত্যকার কিছুটা ওপরে মঞ্চের আকারে অবস্থান করে। একে নদীমঞ্চ বলে।

ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা প্রভৃতি নদীর উভয় তীরে নদীমঞ্চ দেখা যায়। নদীমঞ্চ পলি দিয়ে গঠিত হলে তাকে পলল মঞ্চ বলে। পলিহীন বা শিলা দ্বারা গঠিত নদীমঞ্চকে প্রস্তর শয্যা নদীমঞ্চ বলে। ভূমিভাগের পুনর্যৌবন লাভের ফলে সমান উচ্চতায় নদীর উভয় পার্শ্বে দুটি নদীমঞ্চ গড়ে উঠলে তাকে যুগল নদীমঞ্চ বলে। এ ছাড়া অসমান উচ্চতায় একাধিক নদীমঞ্চ গড়ে উঠলে তাকে অযুগল নদীমঞ্চ বলে।

এইরকম Question answer পাওয়ার জন্য আমাদের website visit করুন

দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষা বিজ্ঞানের(education) সব প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment