পাঠক্রম প্রণয়নে শিক্ষার্থীর চাহিদা ও সামর্থ্যের গুরুত্ব
বর্তমানে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষায় শিক্ষার্থীর পরিগমন, আগ্রহ, চাহিদা, প্রবণতা, মানসিক সামর্থ্য প্রভৃতি বিষয়ের কথা মাথায় রেখে পাঠক্রম প্রণয়ন করা হয়। শিক্ষার্থীর চাহিদা ও সামর্থ্য পাঠক্রম প্রণয়নের ক্ষেত্রে কী ভূমিকা পালন করে তা নীচে আলােচনা করা হল-
(১) চাহিদা : বিভিন্ন বয়সে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের চাহিদা লক্ষ করা যায়। ওই চাহিদাগুলির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে পাঠক্রম প্রণয়ন করা প্রয়ােজন। তা ছাড়া প্রত্যেক শিক্ষার্থীর চাহিদা ও শিক্ষাগত সামর্থ্য সমান হয় না। তাই সেদিকে লক্ষ রেখে পাঠক্রমকে বৈচিত্র্যপূর্ণ ও বহুমুখী করা প্রয়ােজন।
(২) পরিণমন : উপযুক্ত পরিণমন শিক্ষার্থীর শিক্ষার জন্য বিশেষ প্রয়ােজন। যথাযথ পরিণমন না ঘটলে, শিক্ষার্থী পাঠ্যবিষয়বস্তু বুঝতে পারে না, করণীয়গুলি করতে পারে না এবং বহু বিষয়ে উৎসাহ পায় না। তাই পাঠক্রম শিক্ষার্থীর পরিগমন অনুযায়ী হওয়া প্রয়োজন।
(৩) আগ্রহ : পাঠক্রম প্রণয়নের সময় শিক্ষার্থীর আগ্রহের বিষয়গুলির দিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ আগ্রহ মনােযােগ আনতে সাহায্য করে, আবার মনােযােগ থাকলে শিক্ষার্থী সহজেই পাঠ আয়ত্ত করতে পারে।
(৪) প্রবণতা : পাঠক্রম প্রণয়নের সময় শিক্ষার্থীর প্রবণতার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থী তার নিজস্ব প্রবণতা অনুযায়ী বিষয় ও কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারে। তাই শিক্ষার্থীর প্রবণতার দিকে লক্ষ রেখে আধুনিক পাঠক্রম রচনা করা হয়।
(৫) মানসিক সামর্থ্য : ব্যক্তিগত বৈষম্যের নীতি অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষার্থীর শিখন-ক্ষমতা অপর শিক্ষার্থীর থেকে আলাদা। তাই পাঠক্রম প্রণয়নের সময় পাঠক্রম প্রণয়নকারীদের শিক্ষার্থীর মানসিক সামর্থ্যের বৈষম্য সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। কেন্দ্রীয় বিষয়গুলি সব শিক্ষার্থী গ্রহণ করবে এবং ঐচ্ছিক বিষয়গুলি শিক্ষার্থীরা নিজের নিজের বিশেষ ক্ষমতা অনুযায়ী নির্বাচন করবে।
ওপরের আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, পাঠক্রম প্রণয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর চাহিদা, সামর্থ্য, মানসিক ক্ষমতা প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখা প্রয়ােজন।