প্রজাদের বিদ্রোহী হওয়ার কারণ
প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি সুভাষ মুখোপাধ্যায় রচিত ‘গারো পাহাড়ে নীচে’ শীর্ষক রচনাংশ থেকে গৃহীত হয়েছে। পাঠ্যাংশ জমিদারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয় চিত্র প্রকাশিত হয়েছে। জমিদারের পাইক-বরকন্দাজরা প্রজাদের উৎপাদিত ফসলের বেশিরভাগ অংশ নিয়ে যেতে নানা অচলিয়া। জমিদারকে খাজনা তথা ‘টঙ্ক’ নিতে গিয়ে প্রজারা নিঃস্ব হয়ে পড়ল। তাদের এই অন্ন সংস্থা তারা হারাত। এরপর আবার জমিদারে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কিছু আইন তৈরি করেছিল।
এমনই ছিল ‘হাতি বেগার’ আইন। হাতি শিকারের শখ মেটাতে জমিদার পাহাড়ে মাচা বেঁধে সৈন্য সামন্ত নিয়ে বসতেন। অন্যদিকে সকল বৈশি রোজা খাবার নিয়ে যে জঙ্গলে হাতি আছে তার চারপাশে ঘিরে থাকতো।এই ভাবেই জীবন বিপন্ন করে ‘বেড়’ দেওয়ায় তাদের হয় সাপের কামড়ে বা বাঘের আক্রমণে মরতে হতো। জমিদারের হাতি শিকার সব পূরণ করতে নিরহ প্রজাদের বাধ্য হয়ে অকালে প্রাণ দিতে হতো। এই ভাবেই চলতে চলতে একসময় প্রজারা অমানবিক ‘হাতি বেগর’-এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেছিল।
হাতি বেগার- এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
জমিদার জোর করে প্রজাদের কাছ থেকে টাকা কিংবা ফসল আদায় করত। প্রজানা যদিও সেটা মেনে নিয়েছিল কিন্তু হাতি বেকার আই নিয়ে তারা মানতে পারেনি। হাতি বেগার আইনের মতো অমানবিক আইনের প্রতিবাদে সামান্য মানুষগুলো বিদ্রোহী হয়ে উঠলো। তারা জানত জমিদারের ক্ষমতার কাছে তারা পেড়ে উঠবে না। তবুও তারা পিছুপা হয়নি। গোরাচাঁদ মাস্টার তাদের বিদ্রোহী নেতৃত্ব দিলেন। পরগণায় পরগনায় হল মিটিং। জমিদারের সঙ্গে লড়াই চালানোর জন্য কামারশালায় মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র তৈরি হতে লাগলো। কিন্তু তারা ছিল অত্যন্ত দুর্বল। শেষ পর্যন্ত জমিদারের সেপাই দের কাছে প্রজাদের পরাজয় ঘটলো।
উপসংহার
আপা দৃষ্টিতে এই বিদ্রোহ ফলদায়ক না হলেও ‘হাতি বেগার’ আইনকে তারা বন্ধ করেছিল। লেখক বলেছেন এসব গল্প চৈতন্যনগর, হিঙুলকোণার খগ মোড়ল, আমুতো মোড়লের বংশধর এর মুখে শোনা যায়। শুধু প্রজাদের দুঃখ কষ্টের কথাই নয়, লেখক তাদের প্রতিবাদ প্রতিরোধকে এভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর