ছোট গল্পের বৈশিষ্ট্য
সাহিত্য-শাখার আধুনিক সংযোজন হল ছোট গল্প। সাধারণত ছোট গল্প কয়েকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। ছোটগল্পের আয়তন হয় সংক্ষিপ্ত, চরিত্র সংখ্যা স্বল্প, ঘটনার ঘনঘটা কম, বিষয়ে একমুখী ও তীব্র গতি সম্পন্ন এবং অন্তিমে থাকে একটা ‘শেষ হয়েও হইল না শেষ’-এর অন্তর্চমক। বলাবাহুল ও ছোটগল্প নয় বিন্দুতে সিন্ধু দর্শনের মত-যার মধ্যে আরম্ভের তীর্যকথা এবং সমাপ্তির চমৎকারিত্ব পরিলক্ষিত হয়। কর্তার সিং দুগ্গাল রচিত আলোচ্য ‘অলৌকিক’ গল্পটি ছোট গল্প হিসেবে স্বার্থ কিনা তা বিচার করা প্রয়োজন।
প্রথম গল্প
এ রচনাটিতে দুটি গল্পের সংযোজন ঘটেছে। প্রথম গল্পে দেখি, গুরু নানক কিভাবে রুক্ষ-ঊষর পাহাড়ি অঞ্চলে ঝরনার সৃষ্টি করে শীষ্য মর্দানার তৃষ্ণা মিটিয়েছে, নির্দয় বলি কান্দারের জল পূর্ণ হোক নিমেষে জলশূন্য হয়ে গেছে এবং বলির নিক্ষিপ্ত প্রখরখণ্ডের গতি নানকের হাতে ছোঁয়ায় থেমে গেছে। এই গল্পে রয়েছে গুরু নানকের দৈব মহিমা বা অলৌকিক ক্ষমতার পরিচয়।
দ্বিতীয় গল্প
দ্বিতীয় গল্পে দেখি, পাঞ্জা সাহেবের অধিবাসীরা কি অসাধারণ সাহস ও আত্মত্যাগের সংকল্পে উদ্বুদ্ধ হয়ে ইংরেজের হাতে বন্দি দেশ প্রেমিকদের খাদ্য-পানীয় দেওয়ার জন্য রেললাইনের বুকে পেতে চলন্ত ট্রেনের চাকার তলায় জীবন দিয়ে ট্রেন থামাতে বাধ্য করেছে। এই ধরনের আত্মত্যাগের ঘটনা সত্যই অলৌকিক, অর্থাৎ লৌকিক জগতের এর নজির মেলে না।
উপসংহার
দুটি কাহিনীতেই রয়েছে টানটান গতি এবং পরিমাণে পাঠ্যকচিত্ত জাগ্রত হয় গভীরে বিষ্ময়, যাও উপরোক্ত ছোটগল্পের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এজন্য এটি যে ছোটগল্প হিসেবে স্বার্থক, তাতে সন্দেহ নেই।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর