“গভীর, বিলাশ শব্দ,”- এ শব্দ কিসের? কবির চেতনায় এই শব্দ কিভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে?

শব্দ

‘কয়েকটি কবিতা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতা এই ‘গভীর, বিশাল শব্দ’ বলতে কবির সমর সেনের ‘মহুয়া বনের ধারে কয়লার খনি’ মজুরদের নিবিড় অন্ধকারে কয়লা ভাঙ্গার শব্দকে বুঝিয়েছেন।

কবির চেতনার প্রভাব

কবি সমর সেন ‘মহুয়া দেশ’ কবিতায় দেখিয়েছেন প্রগতির কাছে প্রকৃতিকে কি অসহায় ভাবে আত্মসমর্পণ করতে হয়। শহরের অবসর থেকে মুক্তি পেতে কবি মন অনেক, অনেক দূরের প্রকৃতির উন্মুক্ত পরিবেশে মহুয়ার দেশ চলে যেতে চায়। যেখানে-

“সমস্তক্ষণ যেখানে পথের দু’ধারে ছায়া ফেলে দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য, আর দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গ তাকে আলোড়িত করে।

যেখানে কবিতার সবকিছু দিয়ে উপভোগ করতে চান প্রকৃতির উদার সান্নিধ্য। কিন্তু সেই প্রকৃতির রাজ্যের পৌঁছে গিয়ে কবি দেখছেন পুঁজিবাদের করাল গ্রাসে সে দেশের শান্তি উধাও। ধনতন্ত্রের ভয়াবহ ভাব সে দেশে বদলে দিয়েছে মানুষের অস্তিত্বকে। যে দেশে নির্জনক্ষণ ভরিয়ে তুলত ‘সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস’ সে দেশের রাত্রি নিবিড় অন্ধকারে শোনা যায় কয়লা খনি কর্মব্যস্ততার গভীর আওয়াজ। অথচ মানুষের জীবনযাপন প্রণালী বদলাইনি কিছুই বরং আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বেঁচে থাকা। কয়লা খনির প্রচন্ড শব্দ খান খান করে দেয় মুহূর্তের স্তব্ধতাকে। যে নাগরিক কোলাহল থেকে কবি পালাতে চেয়েছিলেন, পেতে চেয়েছিলেন প্রকৃতির স্নিগ্ধ সান্নিধ্য। সেখানে তিনি শুধুই খুঁজে পান বিষন্নতা, দুঃস্বপ্ন। খুব কাছ থেকে মহুয়ার দেশ কে দেখে কবি বোধ হয় প্রভাবিত হন আবারো নাগরিকতাকেই সমর্থন করতে।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

1 thought on ““গভীর, বিলাশ শব্দ,”- এ শব্দ কিসের? কবির চেতনায় এই শব্দ কিভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে?”

Leave a Comment