ঔপনিবেশিক যুগে অর্থাৎ ব্রিটিশ শাসনাধীন অবস্থায় এই বাংলার বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে নবযুগের সূত্রপাত হয়েছিল। বলা যেতে পারে, এই সময় থেকে আধুনিক বিজ্ঞান চর্চার ও সূচনা হয়। বিজ্ঞান চর্চার সূচনার ক্ষেত্রে বোটানিক্যাল গার্ডেনের বিশেষ ভূমিকা কথা স্বীকার করতেই হয়।
ভূমিকা
বর্তমানে হাওড়া শিবপুরের যে জাতীয় উদ্যান ‘আশ্চর্য জগদীশচন্দ্র বসু বোটানিক্যাল গার্ডেন’ বা ‘শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন’ নামে পরিচিত তার পূর্ব নাম ছিল ‘রয়্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেন’ অনেকে একে কোম্পানির বাগানো বলতো। নানা ধরনের মসলাপাতি যেমন -লবঙ্গ, এলাচ, দারুচনি, গোলমরিচ প্রভৃতি গাছ কলকাতা বা তার কাছাকাছি অঞ্চলের ছিল না এবং হতেও না। তাছাড়া ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জাহাজ তৈরির উপযোগী সেগুন কাঠ এই দেশে হতো না। তাই এইসব বনজ সামগ্রীর প্রয়োজন মেটানোর জন্য প্রথমে রবার্ট কিড সাহেবের সুপারিশ ক্রমে কোম্পানি এই বাগান রচনার ক্ষেত্রে উদ্যোগী হন।
১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে কিড সাহেব এই কোম্পানির বাগানে প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম অবনৈতিক সুপার নিযুক্ত হন। তারপরে ড. উইলিয়াম রকসবার্গ যিনি ভারতীয় উদ্ভিদ বিদ্যার জনক নামে পরিচিত, তার তত্ত্বাবধনে এই বাগানের সমাধি উন্নতি ঘটে। ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে ‘বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’ নামে স্বতন্ত্র প্রাসঙ্গিক বিভাগ ও গড়ে ওঠে। রক্সবার্গ তার কর্মজীবনে যে সব উদ্ভিদ গ্রহণ করেন তা ‘ফ্লোরি ইন্ডিকা’ নামে পুস্তক প্রকাশিত হয়। এতে প্রায় ২৫৮৩ টি প্রজাতির গাছের নাম আছে – যার বহু সংখ্যক প্রজাতি ‘বোটানিক্যাল গার্ডেন’-এ এখনো দেখা যায়। ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে ‘হোর্টাস বেঙ্গলেনসিস’ (Hortus Bengalensis) নামে রক্সবার্গ এই গার্ডেনের ৩৫০০ ঠিক আছে কালিকা প্রকাশ করেন, যা আজও গবেষকদের কাছে অমূল্য। এইভাবে উদ্ভিদ বিজ্ঞানের ব্যাপক চর্চার ক্ষেত্রে বোটানিক্যাল বিশাল ভূমিকা ছিল, তা স্বীকার করতেই হয়।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর