“এত ফসল, এত প্রাচুর্য-তবুও কিন্তু মানুষগুলোর দিকে তাকালে মনে হয় জীবনে তাদের শান্তি নেই।”- মানুষ বলার মনে শান্তি নেই কেন?

ভূমিকা

সুভাষ মুখোপাধ্যায় ‘গারো পাহাড়ে নিচে’ প্রবন্ধে গারো পাহাড় সংলগ্ন মানুষের কথা বলতে গিয়ে তাদের দুঃখের সঙ্গী হয়েছে। তিনি বলেছেন, সুসং চরমোনাই সীমান্তই যারা ফসলে ভরিয়ে দেয়, জমিদারের অত্যাচার থেকে তাদেরও রেহাই নেই।

জমিদারের অত্যাচার

গারো পাহাড়ের পাহাড়ি তলী এলাকায় জমি অত্যন্ত দুর্গম ও অনুর্বর হয় সেই অঞ্চলের অধিবাসীরা অত্যন্ত কষ্ট করে ফসল ফলায়। কষ্ট সহিষ্ণু ও পরিশ্রমী ও আদিবাসীরা দক্ষতার সঙ্গে কাজটি সম্পূর্ণ করে। তাই ফসল কাটার পর খামারে তোলার সময় তারা দারিদ্র মুছে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। লেখক বলেছেন-ধান কাটার সময় হলে নারী পুরুষ কাস্তে নিয়ে মাঠে যায়। ছোটবেলায় পিঠে ধানের আঁটি বেঁধে কুজো হয়ে খামার দিয়ে আসে। কিন্তু উৎপাদিত ফসল ঘরে তোলার আগেই জমিদারের পাই-বরকন্দাজ ‘শনি’র মতো আবিভূত হয়ে খাজনা মিটানোর দায়ভার চাপিয়ে ফসল নিয়ে যায়।

মনে শান্তি নেই

গায়ে আল বাঁধা রাস্তায় যখন ঘোরার খুরের শব্দ কিংবা নাগরা জুতোর খট খট শব্দ শোনা যায়, তখন কৃষকের স্বপ্ন ভেঙে যায়, ছোট ছেলেরা ভয়ে মায়ের আঁচলে লুকোই। খিটখিটে বুড়িরা নিরুপায় হয়ে পেয়াদাদের অভিশাপ দিতে থাকে। জমিদার কি টাকা দিতে গিয়ে কৃষকেরা সর্বস্বান্ত হয়। সনি দৃষ্টিতে ছারখার হয়ে যায় সুসং পরগনায় অধিবাসীদের স্বপ্ন। সুদখোর মহাজন ও জমিদারের শোষণেরা স্বাভাবিক ও সচ্ছল জীবন যাপন থেকে বঞ্চিত হয়।

লেখক এখানে সাধারণ মানুষের দুঃখকে এবং তাদের প্রতি শোষণের চিত্রটি নিপুণভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment