আরোগ্যের জন্য এই সবুজ ভীষণ দরকার”- আরোগ্যের সঙ্গে সবুজে সম্পর্ক উক্ত কবিতা অবলম্বনে বুঝিয়ে দাও ?

আরোগ্যের কামনা

কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় বিংশ শতাব্দীর ৭০-৮০ দর্শকের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক ‘গভীর অসুখের সময়’-এর কবি। অবক্ষয়, অরাজকতা, নিরাশা, শূন্যতা ছাড়া ও পশ্চিম সভ্যতার বস্তুতন্ত্রের উদ্দাম ঢেউ আছড়ে পড়েছিল আমাদের সংস্কৃতির উপর। সমকালীন রাজনীতি ও সমাজ সম্পর্কে সাধারণ মানুষ ছিল তীব্র অনাস্থা, হৃদয় গভীরে নৈরাশ্য। নগর কেন্দ্রিক বিচ্ছিন্নতা-বিষন্নতার ক্রনিক ব্যাধির সঞ্চারে কবি ও যেন এই মুমূর্ষু নগরীর একজন। কবি ‘ব্যথার মাঝে ঘুমিয়ে’ না পড়ে জেগে ওঠে, দায়ভার গ্রহণ করেন নাগরিক জীবনের রোগ মুক্তির। মানবের অমানবিক কৃতকর্মের শাপমোচনে তিনি তৎপর হন। বলা যায়, এই প্রায়শ্চিত্তের উপায় হিসেবে আত্মপ্রকাশ ‘আমি দেখি’ কবিতার।

আরোগ্যের সঙ্গে সবুজের সম্পর্ক

আরোগ্যকামি কবি, নগরে বৃক্ষসৃজন এর ডাক দেয়। যদিও শেষমেষ এ ডাক কবির ব্যক্তিগত থাকে না। “গাছ তুলে আনো, বাগানে বসা”- ব্যক্তির গণ্ডি পেরিয়ে বাগানে অনেকের অনুভূতির সঙ্গে সমীকৃত হয়ে যায়। কবি জানেন, নগরের ধোঁয়া ধুলি ধূসরিত পৃথিবীর জন্যই বৃক্ষের সবুজ স্নিগ্ধতা একান্ত প্রয়োজন। মানুষের শত্রু হয়ে ওঠার হৃদয়হীন নগর প্রতিনিয়ত মানবিকতাকে হত্যা করে। রক্তের রঙে রাঙানো, হৃদয়হীন, রানহীন পান্ডুর পৃথিবীর একমাত্র আরোগ্যের পথনির্দেশিকা ‘সবুজের অভিযান’ মৃতপ্রায় নাগরিক জীবন সবুজের সহৃদয় স্পর্শে নির্মল হয়ে উঠবে, নতুন রূপে প্রকাশিত হবে। আশাবাদী কবি এই স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। সবুজে মানুষের একান্ত আপন, তাদের একমাত্র প্রয়োজন।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment