‘আমি দেখি’ কবিতায় নাগরিক জীবনের প্রতি কবির যে মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে, তা বুঝিয়ে লেখো? অথবা, ‘আমি দেখি’ কবিতাটির মধ্যে দিয়ে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় কোন বার্তা দিতে চেয়েছেন?

প্রেক্ষাপট

কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের দুঃসময়ের কবি। বিশ শতাব্দীর ৭০-৮০ দশকের রাজনৈতিক-সামাজিক-আর্থিক ক্ষেত্রে ‘গভীর অসুখের’ সময়। অবক্ষয়, অরাজকতা, নিরাশা, শূন্যতা যখন চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে এরকম নাগরিক জীবনে বিপর্যস্ত-বিধ্বস্ত পটভূমিতে ‘আমি দেখি’ (১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে) কবিতাটি রচিত।

মনোভাব নগরের প্রতি

শহরের বাসিন্দা কবির চিরকালীন টান অরণ্য প্রকৃতির প্রতি। কিন্তু ক্রমাগত সবুজ ধ্বংস করে কংক্রিটে মোড়া এ শহর আচরম ব্যাধির শিকার। সে হাঁ করে গিলেছে গাছের পর গাছ, অরণ্যের পর অরণ্য। সবুজ নিধনে তাণ্ডব নৃত্য চলেছে সমগ্র শহরে।

কবির আশা

কবি জানেন, এই দুরবস্থা থেকে মুক্তি ঘটবে নতুন করে সবুজের সৃজন এর মাধ্যমে। তিনি বলেছেন গাছ লাগাতে। নাগরিক জীবনকে তিনি সবুজ বনানীর কাছে নতজানু হতে বলেছেন, কারণ আরোগ্য লাভ এভাবেই সম্ভব, এইভাবে মানবতার মুক্তি ঘটবে মহা বিনাশের ধূসরতা থেকে। কবির অন্তরে বিশ্বাস, ‘ব্যক্তি আমি’র এই চাওয়া অচিরেই বহু-র চাওয়ায় রূপান্তরিত হবে। কারণ কবি তো একা মুমূর্ষু নন এই নগরে।

কবির বার্তা

তিনি বলেছেন শহরের বাগান একদিন সবুজ হবে। শহরের থেকেও গড়ে তুলতে হবে সবুজের জঙ্গল। সবুজাইনয় সুখের কারণ, ভালো থাকার কারণ। সবুজ পিয়াসি কবি এই বার্তায় পৌঁছে দিয়েছেন পাঠকের কাছে, নগর জীবনের কাছে ‘আমি দেখি’ কবিতার মাধ্যমে।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment