‘আমি দেখি’ কবিতায় জঙ্গলে ও শহরে যাপিত কবি জীবন কিভাবে প্রতিভাত হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করো?

অরণ্যের প্রতি ভালবাসা

কবি জীবনানন্দ দাসের পরবর্তীকালে আধুনিক বাংলা কাব্যজগতে শক্তি চট্টোপাধ্যায় একটি বিশিষ্ট নাম। তার ‘আমি দেখি’ কবিতায় জঙ্গলেও শহরে যাপিত কবি জীবন দুই ভিন্ন অনুভবে ঋদ্ধ। নাগরিক কবি হলেও শক্তি চট্টোপাধ্যায় অরণ্য প্রেমী। জঙ্গল তাকে কখন‌ও উন্মাদ করে, উদাস করে ; আবার কখনো উদ্দাম স্বেচ্ছাচারী করে তোলে। তার নানা কবিতায় উঠে আসে চাঁইবাসা, বেথুয়াডহরি-সহ ভিন্ন জঙ্গলের প্রসঙ্গ। বোহেমিয়ান কবি প্রাণ জঙ্গলের সবুজের সান্নিধ্যে শান্তি খুঁজে পান।

শহরে যাপিত কবি জীবন

এমন মানুষ যখন দীর্ঘকাল ধরে অরণ্য বিচ্ছিন্ন হয়ে শহুরে জীবনযাপনে বাধ্য হন, তখনই সেই যন্ত্রণার মধ্যে জন্ম নেয় ‘আমি দেখি-র’ মত কবিতার। হয়তো শারীরিক অসুস্থ তাই কবির শহরবন্দী, তার মন ভালো নেই। তিনি বেদনার্ত কন্ঠে বলেন-

“বহুদিন জঙ্গলে কাটেনি দিন বহুদিন জঙ্গলে যায়নি বহুদিন শহরেই আছি।”

সবুজের প্রয়োজনীয়তা

কিন্তু শরীর ও মনের আরোগ্যের জন্য তার গাছ দেখা আর গাছের সবুজ দেখা ভীষণ দরকার। শহরে সবুজের চিহ্ন নেই, এখানে কেবলই ধূসরতা-

“শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায় সবুজের অনটন ঘটে…”

কবির আবেদন

যে শহর নিজেই অসুখগ্রস্থ সে আরোগ্যের সন্ধান দিতে পারে না। তাই শহরে থেকে সামান্য বিকল্পের খোঁজের কবি উদগ্রীব। কবিতায় শেষ অংশে তার আকুল আবেদন-

“গাছ আনো, বাগানে বসাও। আমি দেখি।।”

বানানো জঙ্গলের প্রাণতায়, সবুজতায় এভাবে নিরুপায় কবি শান্তির আশ্রয় পেতে চেয়েছেন।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment