শিখন ও পরিণমনের মধ্যে সম্পর্ক ?

শিখন আচরণ ধারার মধ্যে এমন একটি স্থায়ী পরিবর্তন যা ব্যক্তি নিজের অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জন করে থাকে। এবং পরিণমন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার অনুশীলন ও শিখন নিরপেক্ষ ও এক স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

(১) বিকাশমূলক প্রক্রিয়া

শিখন ও পরিণমন দুটি প্রক্রিয়ায় হল বিকাশমূলক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের আচরণের পরিবর্তন ঘটায়। এই দুই প্রক্রিয়ায় শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং এই দুই প্রক্রিয়ায় একে অপরের অপরের নির্ভরশীল।

(২) নির্ভরশীলতা

শিখন ও পরিণমন প্রক্রিয়া দুটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। শিখনের গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো পরিণমন, মানে পরিণমন ছাড়া শিক্ষণ অসম্পূর্ণ। পরিণমন‌ই শিখন প্রক্রিয়ার সীমারেখা নির্ণয় করে। আবার, শিখন পরিণমন প্রক্রিয়ায় ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। উদাহরণ স্বরূপ – ব্যক্তির দৈহিক অনুশীলন দৈহিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই বলা যেতে পারে, শিখন পরিণমন দুটি প্রক্রিয়ায় সম্পর্কযুক্ত এবং শিশুর জীবন বিকাশেও দুটি প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

(৩) মনোবিদদের অভিমত

মনোবিদরা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছেন শিশুর মধ্যে পরিণমন ঘটলেই তবেই বিশেষ শিখন ঘটানো সম্ভব। শিশুর স্নায়ু বৃদ্ধি ও বিকাশ নির্ণয় করলে শিশু কি কি শিখতে পারে, বা কতখানি শিখতে পারে। বাস্তবে তা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, শিশু যদি কোন কিছু শেখার জন্য প্রস্তুত না হয় এবং তাকে যদি জোর করে প্রস্তুত করানোর চেষ্টা করা হয় তাহলে ফল খারাপ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ – একটি দুই তিন বছরের শিশুকে যদি অঙ্ক শেখানো হয় তাহলে সে কখনোই সব ভুল হবে না। তাই পরিণমন‌ই শিখন প্রক্রিয়ার সীমারেখা নির্ণয় করে।

(৪) শিক্ষাবিদের অভিমত

শিক্ষাবিদরা বলেছেন, শিশুর শিখন শুরু করার আগে পরিণমনের সম্পর্কে জানাটা প্রয়োজোন। শিশুর মধ্যে উপযুক্ত পরিণমন ঘটলেই তবে শিখন শুরু করা উচিত। শিশুর জীবনধারার ক্ষেত্রে শিখনের গুরুত্ব অপরিহার্য। এইজন্য শিক্ষাবিদরা মনে করে শিখন ও পরিণমন দুটি প্রক্রিয়া পরস্পরের বিরোধী নয়। বরং শিখন ও পরিণমন প্রক্রিয়া দুটি শিশুর জীবন বিকাশের জন্য আবশ্যিক।

Leave a Comment