মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের শিক্ষার্থীদের এমন ধরনের জ্ঞানমূলক, সমাজমূলক, ও আদর্শমূলক শিক্ষা দিতে হবে, যাতে ব্যক্তিসত্তা ও সমাজ সত্তা উভয়দিকেই তারা গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে পারে।
মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য কে ভিত্তি করে ভারতীয় শিক্ষা কমিশন বা কোঠারি কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রম কে সুসংহত ও সুগঠিত করার সুপারিশ করেছেন তা নিম্নে আলোচনা করা হলো -মাধ্যমিক স্তরের পাঠক্রম মোট পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায় যথা –
১ ভাষা
এই স্তরে শিক্ষার্থীদের যে পরিমাণ মানসিক বিকাশ ঘটে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ভাষা বিভাগে তিনটি ভাষা শেখানোর কথা বলা হয়েছে, অর্থাৎ এখানে কিন্তু ত্রিভাষা সূত্র প্রযোজ্য হবে প্রথম ভাষাটি হবে মাতৃভাষা বা স্থানীয় ভাষা, দ্বিতীয় ভাষা হল হিন্দি বা ইংরেজি এবং তৃতীয় ভাষাটি হল অতিরিক্ত যে কোন প্রাচীন ভারতে ভাষা।
২ বিজ্ঞান
বিজ্ঞান বিষয়টি গঠিত হয় তিনটি বিষয় নিয়ে। যথা
ভৌতবিজ্ঞান – এর মধ্যে থাকে পদার্থবিদ্যা ও রাসানবিদ্যা।
জীবনবিজ্ঞান – জীবন বিজ্ঞানের মধ্যে রয়েছে – জীববিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা ও শরীরবিদ্যা।
গণিত – এই গণিতের মধ্যে আবার কিন্তু ছয়টি বিষয় রয়েছে। যথা – পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি, ত্রিকোণমিতি, পরিমিতি, রাশিবিজ্ঞান।
৩ সমাজবিজ্ঞান
এই বিভাগে রয়েছে ইতিহাস ও ভূগোল। এই দুটি বিষয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সামাজিক, ভৌতিক ও অর্থনৈতিক জ্ঞান লাভ করতে পারবে।
৪ কর্ম অভিজ্ঞতা
এই বিভাগের মধ্যে তিনটি বিষয় রয়েছে, যেমন কর্মশিক্ষা, শরীর শিক্ষা, সমাজসেবা। কর্ম অভিজ্ঞতা মূলক জ্ঞান এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাস্তব ভিত্তিক জ্ঞান লাভ করে। , আর শারীরিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শরীরচর্চা ও বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করানো হয়। আর সমাজসেবামূলক কাজের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন ভালো কাজে নিজেকে অংশ গ্রহণের কর্মসূচি বা উদ্যোগ দেওয়া হয়ে থাকে।
৫ অতিরিক্ত বিষয়
এই বিভাগে একাধিক বিষয় আছে। এখান থেকে শিক্ষার্থী তার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো একটি বিশেষ বেছে নিতে পারে –
ভাষা বিভাগ – এই ভাষা বিভাগের মধ্যে রয়েছে তিনটি ভাষা, মাতৃভাষা, হিন্দি ভাষা অথবা ইংরেজি ভাষা এবং অপরটি হল প্রাচীন ভারতীয় যেকোনো একটি ভাষা।
বিজ্ঞান বিভাগ – এবং বিজ্ঞান বিভাগের মধ্যেও আমরা তিনটি ভাষা দেখতে পাই। ভৌত বিজ্ঞান, জীবন বিজ্ঞান ও গণিত।
সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ – এই সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের মধ্যে আমরা কিন্তু দুইটি বিষয় দেখতে পাই যথা – ইতিহাস ও ভূগোল।
কর্ম অভিজ্ঞতা বিভাগ – এই কর্ম অভিজ্ঞতা বিভাগের মধ্যে আমরা কিন্তু তিনটি বিষয় লক্ষ্য করি। যথা – কর্মশিক্ষা, শারীরিক শিক্ষা ও সমাজসেবা।
ঐচ্ছিক বিষয় – এই ঐচ্ছিক বিষয়ের মধ্যে কিন্তু এখানে অত্যাধিক বিষয় আছে অর্থাৎ শিক্ষার্থীর মন পছন্দ অনুযায়ী সে যে কোন একটি বিষয় বস্তু নির্বাচন করতে পারবে।
মূল্যায়ন
সুতরাং, আলোচনা থেকে দেখা যায় যে – মাধ্যমিক স্তরের পাঠক্রমটি সার্বিকভাবে শিক্ষার সকল দিক স্পর্শক করতে পারেনি। তবে পাঠক্রমটি যে আন্তরিকতার সঙ্গে রূপ দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল তার স্পষ্ট কিন্তু প্রতিফলন দেখা যায়।
এই সম্পর্কে আমাদের একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন যে পাঠক্রম হলো শিক্ষার একটি পরিবর্তনশীল উপাদান।। তাই পরবর্তী পর্যায়ে নতুন পাঠক্রম প্রণয়নের সময় আরো বেশি সচেতন ও আন্তরিক কথা হতে হবে।