ভাষা চর্চার আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি যথার্থ সত্যবাদ ঘটে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান চর্চার মধ্যে দিয়ে, অর্থাৎ ভাষা চর্চার আধুনিকতম দৃষ্টিভঙ্গি হলো তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান।
সংজ্ঞা
ভাষাবিজ্ঞানী যে প্রধান শাখায় সমগোত্রীয় ভাষা গুলির মধ্যে তুলনা করে তাদের পিতৃ ভাষা বা উৎস ভাষা (parent language) পুনর্নিমান করা হয়, তাকে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান (comparative linguistics) বলে। এই ভাষাবিজ্ঞানের জনক স্যার উইলিয়াম জোন্স ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে।
যেসব বৈশিষ্ট্যের জন্য তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে আধুনিক ও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে সে গুলি হল-
প্রথমত : তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনা অন্য শাখার চেয়ে অনেক বেশি বিজ্ঞানসম্মত, তার পরিধি ব্যাপক ও বিস্তৃত।
দ্বিতীয়ত : এই পদ্ধতিতে একাধিক ভাষা নিয়ে চর্চা হয় বলে সেই ভাষাগুলি সম্পর্কে গভীর ব্যুৎপত্তির প্রয়োজন।
তৃতীয়ত : এই শাখায় একাধিক ভাষার গবেষণা শেষে মূল ভাষা বংশের পরিচয় পাওয়া যায়। যেমন-সংস্কৃত, গ্রিক, লাতিন এগুলি এক ভাষা বংশ থেকে জাত।
চতুর্থত : একাধিক ভাষায় আলোচনায় ভাষাগুলির মধ্যে ঐক্য সূত্র আবিষ্কার করা হয়।
পঞ্চমত : ঐতিহাসিক ও বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রগুলি কে ব্যবহার করে আধুনিকতম বিজ্ঞান দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে ভাষা চর্চা হয়ে থাকে ভাষাবিজ্ঞানে।
ষষ্ঠত : এখানে সমগোত্রজ ভাষাগুলির মধ্যে তুলনা করে তাদের সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য পর্যালোচনা করে মূল ভাষার পুনঃনির্বাণ সম্ভব।
১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ‘রয়েল এশিয়াটিকের সোসাইটি’তে উইলিয়াম জোন্স ভাষা নিয়ে যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন বস্তুত তখন থেকেই এই দৃষ্টিভঙ্গির সূত্রপাত। কালক্রমে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান ইউরোপ, আমেরিকার সহ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে ভীষণ সমাদৃত এক ভাষাবিজ্ঞানের ধারাতে পরিণত হয়।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর