ট্রেনটির পরিচয়
কর্তার সিং দুগ্গাল রচিত ‘অলৌকিক’ গল্পে একটি বিশেষ ট্রেনের কথা বলা হয়েছে। ফিরিঙ্গি অর্থাৎ ইংরেজ শাসকদের নির্দেশে সেই ট্রেনে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী ও দেশপ্রেমিকদের বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল দেশের ভিন্ন শহরে। অভুক্ত ও পিপাসার্ত ভারতীয়দের নিয়ে কোথাও না থেমে, পাঞ্জা সাহেবের উপর দিয়ে সেই ট্রেনটির যাওয়ার কথা। এখানে সেই ট্রেনের কথাই বলা হয়েছে।
ট্রেনটি যেভাবে থামানো হল
পাঞ্জা সাহেব থেকে দূরে অবস্থিত কোন শহরে নিরস্ত্র ভারতীয়দের উপর ফিরিঙ্গিরা গুলি চালিয়েছে।। অনেকেই নিহত বা আহত হয়েছে। যারা ধরা পড়েছে তাদের বন্দি করে দেশের অন্যান্য শহরের জেলে পাঠানো হচ্ছে। কয়েদিদের নিয়ে একটি ট্রেন পাঞ্জা সাহেবের উপর দিয়েই যাবে, কিন্তু কোথাও থামবে না-যাতে অভুক্ত ও পিপাসর্ত বন্দীদের কেউ খাদ্য-পানীয় না দিতে পারে। এ খবর রোডে যাওয়াই পাঞ্জা সাহেবের লোকেরা স্টেশন মাস্টারের কাছে এবং অন্য কর্তা ব্যক্তিদের কাছে টেলিফোন-টেলিগ্রাম ট্রেন থামানোর আবেদন জানায়।
কিন্তু সব আবেদন নিবেদনই বিফল হয়। ট্রেন থামতে বদ্ধপরিকর শহরবাসী ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত কয়েদিদের জন্য স্টেশনের রুটি, পায়েস, লুচি, ডাল মজুদ করে। তারপর ট্রেন আসার কিছু আগে রেললাইনে শুয়ে পড়ে নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ। শেষ পর্যন্ত ট্রেন থামলেও বহু পুরুষের বুকের হাড় ট্রেনের চাকার গুঁড়িয়ে যায়। জীবিতরা ‘জয় নিরঙ্কার’ ধবনিতে বাতাস মুখরিত করে তোলে। কিছু তাজা প্রাণ আর রক্ত স্রোতের বিনিময়ে বেঁচে যায় অনেকগুলো প্রাণ। এইভাবে সেদিন ট্রেন টিকেট থামানো হয়েছিল।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর