চেহারা ও পোশাক
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে আমরা যে বুড়ির চরিত্রটি কে পাই সে ছিল থুত্থুড়ে, কুঁজো ভিকিরি। রাক্ষসী তার চেহারায় এবং এক মাথা সাদা চুল। পরনে ছেঁড়া, নোংরা কাপড়, তেমনি তেলচিটে তুলোর কম্বল। হাতে বেটে লাঠি নিয়ে পিছের পথ ভিজতে ভিজতে বুড়ি দিব্যি একই তালে হেঁটে হেঁটে চা দোকানে উপস্থিত হয়। অপরিচিত বুড়ির মুখ ক্ষয়া, খর্বুটে। কিন্তু সে মুখে সুদীর্ঘ আয়ুর চিহ্ন প্রকট। সকলে এই দুর্যোগে তার বেঁচেবর্তেই আশা নিয়ে যখন বিস্মিত তখনই বুড়ি চা দোকানে ঢুকে যা চায়।
তপ্ত বালিতে পড়ে থাকার কারণ
গ্রামে অকাল বাদলা ছেড়ে, সেদিন আকাশ পরিস্কার হলো সেদিন সবাই আবিষ্কার করল বুড়ি নিঃসাড় দেহ। বটতলার খোদোলে চিৎ হয়ে পড়ে আছে। অনেক বেলা পর্যন্ত তাকে অনড় দেখে চাওয়ালা জগা বলে -“নির্ঘাত মরে গেছে বুড়িটা।” ক্রমে ভিড় বাড়ে। কেউভাবে শিয়াল কুকুরে ছিলে খাবে, গন্ধে টেকা যাবে না। কেউ কপাল ছুঁয়ে দেখে প্রচন্ড ঠান্ডা, নাড়ির স্পন্দন নেই। চৌকিদার কিংকর্তব্যবিমূঢ় গ্রামবাসীদের পরামর্শ দেয়-
“লদীতে ফেলে দিয়ে এসো। ঠিক গতি হয়ে যাবে-যা হবার !” বিজ্ঞ চৌকিদার এর পরামর্শ মেনে পাশের চ্যাংদোলায় ঝুলিয়ে বুড়ি দেহ ফেলে আসা হলো। গল্পে অংশটি মানুষের অমানবিকতাকেই ফুটিয়ে তোলে। গ্রামবাসীরা বুরি মারা গেছে জেনেও তার দেহ সৎকার না করে নদীর চড়ায় ফেলে দিয়ে আসে। দেহতত্ত্ব বালিতে পড়ে থাকার প্রকৃত কারণ মানুষের এই নির্দয় আচরণই।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর