অদ্ভুত দৃশ্য
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পটিতে এক অদ্ভুত দৃশ্যের অবতারণা ঘটতে দেখা যায়। সেটি হল, শীতের প্রাকৃতিক দুর্যোগে গ্রামের উপান্তে এক থুথুড়ে বুড়িকে মৃত কল্পনা করে তার দেহটাকে কিছু হিন্দু মানুষজনের নদীর চরায় ফেলে আসার পর বিকেলে আবার তা কিছু মুসলমান মানুষজনদের দ্বারা বাজারে আনীত হওয়ার।
গ্রামের মানুষের প্রতিক্রিয়া
এর পরের ঘটনা মারাত্মক, সাম্প্রদায়িক কলহের ছাপ সেখানে প্রত্যক্ষ রূপ পেয়েছে। বুড়ির মৃতকল্প দেহ বাজারে এলে হিন্দুরা জানতে চাইল-‘কি ব্যাপার?’ মুসলমান শববাহকরা উত্তরে বলে-‘বুড়ি যে মুসলমান।’এবং একথার রোমান স্বরূপ বলে, তারা বুড়িকে বিড়বিড় করে আল্লা বা বিসমিল্লা বলতে শুনেছে। গায়ের মোল্লা সাহেব পর্যন্ত শপথ করে জানান, তিনি নাকি ভোরের নামাজ সেরে যখন বাস ধরতে বাজারে দিকে আসছিলেন, তখনই বুড়ি মারা যেতে যেতে কমলা পড়ছিলেন। তাই তিনি বুড়ির মৃতকল্প দেহ চড়ায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্যোগী হয়ে বুড়ির কবরের ব্যবস্থা করতে চেয়েছেন। গায়ের ভটচাজমশাই তখন সবে বাস থেকে নামছেন। তিনি সেখানে উঁকি দিয়ে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে করে দেখে শুনে বললেন-তিনি কালা নন, তিনি নাকি বরিকের স্পষ্ট বলতে শুনেছেন, ‘শ্রী হরি শ্রী হরি শ্রী হরি !’ বলা বাহুল্য উভয় ব্যক্তির স্বপক্ষে বিস্তর সাক্ষ্য প্রমাণ জুটে গেল। মোল্লা সাহেবের পক্ষে ফজলু শেখ ও করিম ফরাজি এবং ভটচাজমশাই পক্ষে নকড়ি নাপিত ও নিবারুণ বাগদির চুক্তি প্রযুক্তি খরা করে বুড়ির মরদেহকে স্বধর্মের বলে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করতে লাগলো।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর