বুড়ির চেহারা ও পোশাক
সাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে যে বুড়ি চরিত্র আমরা পাই সে ছিল ভিকির ও থুত্থুড়ে, কুঁজো। তার এক মাথা রুক্ষ সাদা চুল, পরনে ছেঁড়া নোংরা একটা কাপড়। গায়ের লেপ্টে আছে একই রকম তেল চিটচিটে তুলোর কম্বল। নির্দেশনটি যেন রাক্ষসীর। তার হাতে একটা বেটে লাঠি। ক্ষয়ধরা খর্বুটে মুখে সুদীর্ঘ আয়ুর চিহ্ন যেন বলিরেখা এঁকেছে।
চা দোকানে বুড়ির প্রবেশ
চা দোকানে তীব্র তর্ক বিতর্ক চলাকালে পিচপথে ভিজতে ভিজতে বুড়ি এলো চা খেতে। সবাই ভাবল এই দুর্যোগে বুড়ি বেঁচেবর্তেই বা আছে কিভাবে, আর এতটা পথ এই পরিস্থিতিতে হেঁটে আসলোই বা কি করে? কাউকে পাত্তা না দিয়ে বুড়ি চা খেলেও নির্বিকার ভাবে। তা দেখে একজন তাকে, সে কোত্থেকে এসেছে জিজ্ঞাসা করল। বুড়ি মেজাজ এর সঙ্গে উত্তর দিল-‘সে কথায় তোমার কাজ কি বাছারা?” বুড়ির এমন তেজে উত্তর একেও একজন মন্তব্য করল-“বুড়ি যেন তেজি টাট্টু।” বুড়ি রাগান্বিত স্বরে বলে উঠল-“তোমাদের কর্তাবাবা টাট্টু!”
বুড়িকে নিয়ে জনতার প্রতিক্রিয়া
বুড়ি কে নিয়ে রঙ্গতামাশায় কেউ প্রশ্ন করল-“ও বুড়ি, তুমি থাকো কোথায়,”বুড়ি সংক্ষিপ্ত জবাব-“তোমাদের মাথায়।”চা দোকানে কে চায়ের দাম মিটিয়ে দিয়ে বুড়ি সবাইকে উপেক্ষা করে আবার রাস্তায় নামল। যারা এতক্ষণ বুড়িকে নিয়ে মজা করছিল, এবার তাদের সমবেদনা জাগল এই ভেবে, এমন চরম দুর্যোগে বুড়ির কি হবে ! তারা বুড়ির স্বপক্ষেই যেন চেঁচিয়ে বলল-‘মরবে রে, নির্ঘাত মরবে বুড়িটা !’ কথাটা কানে যেতে বুড়ি শাপশাপান্ত করার ভঙ্গিতে দোকানের লোকদের উদ্দেশ্যে “তোরা মর, তোদের শত গুষ্ঠি মরুক” বলতে বলতে বাঁকের মুখে বটতলাটার দিকে চলল।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর