রচনাকাল
নাট্য ব্যক্তিত্ব শম্ভু মিত্রের নাট্যবোধ সম্পর্কে কিছু বলতে যাওয়ার স্পর্ধা, কিন্তু নাট্যকারের স্পর্ধিত নাট্যবোধ অদ্ভুত জীবন্ত হয়ে তার যে কোন নাট্যাঙ্গিকের মধ্যে যে গভীরভাবে বিরাজ করে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সম্ভবত ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়ে তার ‘বিভাব’ নাটকটি ‘বহুরূপী’র প্রযোজনার সমস সময়ের অভিনীত হলে বেশ সাড়া পাওয়া যায়। নাটকটি ৪০ মিনিট সময় কালে ছোট্ট নাটক। ২১ মে, ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে ‘দেশ’ পত্রিকা এ নাটকের অভিনয় সম্পর্কে মন্তব্য করে-“একাঙ্কিকাটিকে প্রথম থেকে আমার হাসি তামাশার ব্যাপার বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু এর বিস্ময়কর পরিণতি যে সপাং করে এক ঘা চাবুকের মত এসে পড়ল সমাজ ও রাষ্ট্রের ওপর। চমকে উঠলাম। কেবল দৃশ্যটির পরিণতির জন্য নয়, চমকে উঠলাম এর পরিবেশ সোনার কায়দায় এবং অভিনয়ের নিতান্ত বৈঠকী আঙ্গিকের জন্য।”
প্যাটেলের মন্তব্য
একদা সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেলের করা মন্তব্য-বাঙালি হাসতে জানে না, জানি শুধু কাঁদতে-আপামর বাঙালির মত স্বয়ং নাট্যকার হাসির নাটক করার নাটকীয় তাকে এ নাটকে এনে নাট্যকার পাঠক+দর্শককে হাসির বদলে এনে ফেললেন কান্নার বাতাবরণে। বাঙালিকে হো হো করে হাসতে শম্ভু-অমর-বৌদি, অনেক গল্প ভাবেন। ‘মাস’ যা যা নেবে, অর্থাৎ প্রেম ; তাতে আবার; ‘প্রগ্রেসিভ’ রাজনীতি মিশলে-এসব বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া হয়। তবু হাসি দাঁড়ায় না। শেষ পর্যন্ত ভুখা মিছিল, উত্তুঙ্গ চাহিদা পূরণের দাবি, দআবইনইরওধএর চেষ্টায় মিছিলে পুলিশের গুলি এবং মানুষের মৃত্যু ও রক্তের স্রোত এবং কান্না এসে মেশে নাটকের মধ্যে।
নাট্যকারের নাট্যবোধ
প্রবল নাটকীয়তা আছে নাটকটিতে। আছে নাট্যাভাবনার নানা স্তর ; মঞ্চ বিজ্ঞানে নো-নাটক, মাইমের প্রয়োগ সম্পর্কে ভাবনা-চিন্তা এবং মঞ্চকে সহজ রেখে নাটকের সংক্ষিপ্ত তার নাট্যগুণ ভরে দেওয়ার আন্তরিক প্রয়াস। সর্বোপরি সংলাপের ছত্রে ছত্রে তির্যকতা, ব্যঙ্গ কৌতুক এবং শানিত মন্তব্য এসে নাটকটিতে নাটকীয়তা ও অভিনয়ের ধারা বাড়িয়েছে। শম্ভু মিত্রের নাট্য তত্ত্ব সম্পর্কে অপরিসীম জ্ঞান, তার নাটক প্রয়োগের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম আবিস্কৃতি এ নাটকের অনিবার্য ছায়া ফেলেছে।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর