ভূমিকা
‘বিভাব’ নাটকের ‘সূচনা’য় জানানো হয়েছে-“এই একাঙ্কিকাটিতে চরিত্ররা তাদের বাস্তব জীবনের পরিচিতি নিয়ে উপস্থিত হন। শম্ভু মিত্র-শম্ভু, অমর গাঙ্গুলী- অমর,…. আর বৌদি-তৃপ্তি মিত্র।” অতএব এ নাটকের ‘শম্ভু’ চরিত্রটি স্বয়ং শম্ভু মিত্রই।
নাটকের শম্ভু মিত্রের প্রাধান্য
নাটকের শুরুতেই শম্ভু মিত্রের একটি দীর্ঘ সংলাপ আছে। নাটকের নামকরণ সম্পর্কে তার চিন্তাভাবনা থেকে শুরু করে তিনি একে একে তুলে ধরেছেন নাট্যমঞ্চ, তার নাট্যসংস্থার দৈন্যের কথা। সেই বক্তব্যে তার নাট্য জ্ঞান, নাট্য প্রয়োগ কৌশল সম্পর্কে নিজস্ব চিন্তা ভাবনা ধরা পড়ে।
পরিহাসপ্রিয়তা
নাটকের অপর দুই চরিত্র অমর বৌদির সঙ্গে সংলাপে আমরা দেখি ভাবনার তির্যকতা, সুতীব্র ব্যাঙ্গ ও কৌতুক। বলা বা হলো শম্ভুর মুখে দেওয়া সংলাপে তীক্ষ্ণতা যেমন আছে, তেমনি সংক্ষিপ্ততার মধ্যে বক্তব্যের ধারালো ভাবটিও লক্ষণীয়। “হ্যাঁ বল্লব ভাই বলে গেছেন-“, “দেখছো না বার্থ রেট কি কিছু সংক্ষিপ্ত ব্যঙ্গ পূণ্য সংলাপের হাস্যময় উপস্থাপনা এসেছি।।
প্রতিবাদী মনোভাব
সঙ্গ চরিত্রের প্রধান বক্তব্য প্রকাশের জুড়িহীন। তিনি হাসির নাটকের হাসির খোরাক সংগ্রহে এসে ত্রুটিহীন চেষ্টার পরেও তা না পেয়ে কান্নার দরজায় কড়া নাড়ে। নাটকে তার বুঝে কিছু প্রমাণ করার ছিল, যাতে তিনি তৎপরও। অমরের সঙ্গে মিছিলে তিনি গুলি চালান দেখেন, রক্তপাত দেখেন ; তারও বুঝি হাসি উড়ে যায়, কান্না আসে। তিনি দর্শকের উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে দেওয়া সংলাপে অমরকে বলেন-“কি অমর-এবার তো হাসি পাচ্ছে?… এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে।” সর্বভারতীয় নেতা বল্লভ ভাইয়ের এক আলগা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শম্ভু এই ব্যঙ্গাত্মক উক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তুমি যেন এখানে বাংলা ও বাঙালির প্রতিনিধি। তার কন্ঠে উচ্চারণ যেন তীব্র প্রতিবাদের মতো শোনায়।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর