শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটক অবলম্বনে নাট্যকারের সমাজ সচেতনতা পরিচয় দাও ?

নাটকের প্রেক্ষাপট

সাহিত্য নির্মাতাকে সমাজ সচেতনতা হইতেই হয়, কারণ সাহিত্য সমাজের দর্পণ। নাট্যকার শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটক কি মধ্যবিত্ত মানুষের কথা বলেছে। নাট্যকারের এই সমাজবোধ প্রকাশের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার তার নাট্যদল-অভিনেতৃবর্গ এবং সবচেয়ে বড় উপকরণ নিঃসন্দেহে তার নাটক। না থাকার অদ্ভুত এক বৃষ্টি কোন থেকে এ নাটকের নাট্য রস পরিবেশন করেছে। তিনি বাঙালি, শুধু তাই নয় একজন চিন্তন-মননশীল শ্রেষ্ঠ বাঙালি।

তাই আপামর বাঙালির মতো তিনিও যখন ৪৩ এর মন্বন্তর, ৪৬ এর দাঙ্গা, ও ৪৭ এর দেশ ভাগের দউঃসহনঈয় স্মৃতিতে মর্মাহত ; তখন হঠকারীর মত সর্বভারতীয় নেতা বল্লভ ভাই প্যাটেলের অবিমৃশ্যকারী মন্তব্যে তিনি প্রবলভাবে বিচলিত হয়ে পড়েন। তার সমুচিত জবাবই যেন এ নাট্য-কাহিনী। নেতা বলেছিলেন-বাঙালিরা হাসতে পারে না। শুধু কাঁদে। নাক ডাকার তাই সমূহ বাঙালির ‘দশের বোঝা একের ঘাড়ে’ করে এই নাকটা প্রয়াসে ব্রতঈ মন।

নাট্যকারের সমাজ সচেতনতা

নাট্যকার বাঙালি সমাজকে হাসাতে চেয়েছেন। এ উদ্যোগের শেষে তিনি যে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, তাতে দেখা যায় বাঙালির হাসির উৎস শুকিয়ে গেছে। কারণ বাঙালির বুকে তৎকালের সামাজিক অভিবাদ যেন জগদ্দল পাথর হয়ে চেপে বসেছিল। এ পাথর সারানোর দায়িত্বের মধ্যে ধৃত তার সমাজ সচেতনতা। হাসির খোরাক সংগ্রহে পথচলতির মধ্যে তিনি পাঠক-দর্শককে হাজির করেন কান্না কৌণিক পরিসরে।

বাঙালি সমাজের তৎকালীন সত্য, তাকে নাট্যকার আড়াল করতে চাননি। সংক্ষিপ্ত কিন্তু তির্যক সংলাপে তিনি বাঙালির অন্তরে প্রেরণা দানের আন্তরিক চেষ্টা করেছেন। তাই নাকটা শেষে তিনি যে অবাঙালি নেতার উদ্দেশ্যে মিছিলের মৃত্যু দৃশ্যে আঙ্গুলি নির্দেশন করে বলেন- “… এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে?” সর্বভারতীয় নেতা বল্লভ ভাইয়ের এক আলগা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শম্ভুর এই ব্যঙ্গাত্মক উক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যেন এখানে বাংলা ও বাঙালির প্রতিনিধি। তার কন্ঠে উচ্চারণ যেন তীব্র প্রতিবাদের মতো শোনায়।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment