“শক্তি চট্টোপাধ্যায় মূলত প্রকৃতি প্রেমের কবি”-সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উক্তিটির আলোকে ‘আমি দেখি’ কবিতাটি বিশ্লেষণ করো?

অরণ্যক পৃথিবীর স্বপ্ন

কবি শঙ্খ ঘোষ শক্তি চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে বলেছেন -“ভালোবেসে ছিলেন তিনি সংসারছুট অরণ্য প্রান্তর। সমুদ্র, পাহাড়, প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে গিয়েছেন তিনি নিজেই হয়ে উঠেছিলেন প্রকৃতি।”জঙ্গলের প্রতি, গাছের প্রতি অদ্ভুত টান ছিল শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের। গাছের ভিতর দিয়ে গাছের হাতে চাওয়ায় তার চিরজনমের অভীপ্সা। তাইতো অরণ্যক পৃথিবীর স্বপ্নে বিভর কবি স্বপ্ন দেখেছিলেন শ্যামলিমার।

অরণ্যক পৃথিবীর প্রতি টান

“জঙ্গলের মধ্যে ঘর ঈশ্বর গরের” -কবি এই আজন্মলআলইত বিশ্বাস নিয়ে জঙ্গলে ছুটে যান, শান্তি পান বৃক্ষের সুনিবিড় সহচর্যে। কিন্তু ‘শহরের অসুখে’ জর্জরিত কবি দীর্ঘকাল অরণ্যক সংস্রব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে নানান কাজে-অকাজে, তবু তো তিনি সবুজের পিয়াসে। যেন এক আদেশনামা তাই শোনান-

“তাই বলি, গাছ তুলে আন বাগানে বসাও আমি দেখি চোখ তো সবুজ চায় !”

রোগাক্রান্ত নগর থেকে মুক্তির আকুতি

রোগাক্রান্ত নগর কবির ভালো লাগেনা। ‘ভালো থাকাই কঠিন, যখন বেঁচে থাকাই কঠিন’- সেই দুঃখ সময়ের কবি তিনি। নগর জীবনের প্রতিদিন মৃত্যু ঘটে মানসিকতার। মানুষের প্রতি বিশ্বাস যেন টলে যায়। কিন্তু কবিকে নৈরাশ্যবাদী হলে চলবে না, পথ তার মত করেই নির্মাণ করতে হবে। কবিতার হৃদয়ের অফার বেদনাকে বুকে চেপে রেখে জঙ্গলের সবুজের গভীরতায় ডুবে যেতে চান। আর সেই ছুটে যাওয়ার অবসরটুকু না পেলে নগরের রিক্ত তার মাঝেই হাগ দেন-

“গাছ আনো, বাগানে বসাও। আমি দেখি।।”

‘সবুজের অভিযান’

বৃক্ষের মধ্যেই মানবতার সুখের চাবিকাঠি খুঁজে পান কবি। শহরেও যেন শুরু হয় ‘সবুজের অভিযান’। কবির ব্যক্তিগত বাগানের সবুজ সৌন্দর্য অচিরেই হয়ে ওঠে সমগ্র নাগরিক রোগগ্রস্ত মানুষের অভিযান।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment