কবির জীবনরস প্রাপ্তি
দীর্ঘ জীবন যুদ্ধে ক্লান্ত অবসন্ন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনের শেষতম প্রান্তে পৌঁছে যেন হারানো চেতনা ফিরে পেলেন; রুপনারায়ণ তথা জীবন নদীর কূলে দাড়িয়ে কবি নব রুপে প্রাণ ফিরে পেলেন, উঠিলেন জেগে। তিনি দেখলেন জীবনের অত্যন্ত প্রবাহ বহমান; সে প্রবাহে রয়েছে জীবনের কলহল, রয়েছে আশা-আশ্বাসের তরঙ্গমালা। তা অবলোকন করে কবি জীবন রসের প্রাপ্তিতে তৃপ্ত হলেন। শেষ দৃষ্টিপাতে কবির সেই জীবনিভিজ্ঞতা যেন রক্তের অক্ষরে লেখা হয়ে থাকল-
“আঘাতে আঘাতে বেদনায় বেদনায়;”
কিন্তু জীবন সত্যকে খুঁজতে কবি সব রকম আঘাতের জন্য প্রস্তুত। সে সত্য কঠিন তথা কঠোর হলেও ভালোবাসার অনুরাগের সহজেই তাকে বরণ করে নিলেন। রূপনারানের তীরে দাঁড়িয়ে তিনি কঠিন সত্যের মুখোমুখি-যে সত্যের কঠিন্যে তার হৃদয় শুদ্ধ হল।
জীবন সত্যের অন্বেষণ
দুঃখ ও সুখের অত্যন্ত জীবনধারায় রবীন্দ্রনাথ জীবন সত্যকে অন্বেষণ করতে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন, তার চেতনা লুপ্ত হয়েছে ক্রমশ। চেতনাহীন সে সময় ধারা কাটিয়ে তিনি হঠাৎই সংবিৎ ফিরে পেলেন রূপনারানের তীরে এসে।
নবচেতনায় সঞ্জীবিত কবি
জীবন নদীর প্রান্ত সীমানায় দাঁড়িয়ে কবি হঠাৎ হৃৎচেতনা ফিরে পেলেন। এতকালে অন্বেষণ স্বার্থ হলো, মুখোমুখি হলেন কাঙ্ক্ষিত সত্যের। নভোচেতনায় সঞ্জীবিত কবি মরণবেলায় শেষ বারের জন্য প্রণতগ জানালেন জীবনকে। নব প্রান্তে উদ্ভাসিত রবীন্দ্রনাথ শেষ দৃষ্টিপাতে হৃদয় জুড়ে দেখলেন সাধের জীবনকে, পৃথিবীকে, ‘রূপনারানের’ তীরে দাঁড়িয়ে।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর