যুক্তরাষ্ট্র ও রাষ্ট্র সমবায়ের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখাে। ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক বিষয়ে কেন্দ্রের প্রাধান্য ব্যাখ্যা করাে।

যুক্তরাষ্ট্র ও রাষ্ট্র সমবায়ের মধ্যে পার্থক্য

যুক্তরাষ্ট্র ও রাষ্ট্র সমবায়ের মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হল一

যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্র কয়েকটি অঙ্গরাজ্য নিয়ে গঠিত এক অখণ্ড সার্বভৌম রাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র আইনানুসারে সংগঠিত একটি আইনগত সংস্থা।

রাষ্ট্র সমবায়: রাষ্ট্র সমবায় হল কয়েকটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের সমাবেশ। রাষ্ট্র সমবায়ের ভিত্তি হল অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি।

ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক বিষয়ে কেন্দ্রের প্রাধান্য

ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক বিষয়ে কেন্দ্রের প্রাধান্য দেখা যায়। আর্থিক ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রবণতার উল্লেখযােগ্য দিকগুলি হল一

[1] রাজ্য ও কেন্দ্রীয় তালিকাবহির্ভূত বিষয় সংক্রান্ত ক্ষমতা: রাজস্ব আদায়ের ব্যাপারে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টনের ক্ষেত্রে দুটি পৃথক তালিকা করা হলেও দুটি তালিকার বাইরে বাকি সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

[2] অর্থ কমিশন নিয়ােগের ক্ষমতা: প্রতি পাঁচ বছর অন্তর কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শে রাষ্ট্রপতি অর্থ কমিশন নিয়ােগ করেন। কমিশন দুটি প্রধান দায়িত্ব পালন করে一

  • কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বণ্টনযােগ্য রাজস্ব থেকে উভয় সরকারের প্রাপ্য অংশ নির্ধারণ করা এবং
  • রাজ্যগুলির জন্য কেন্দ্রীয় অনুদানের পরিমাণ নির্ধারণ করা। এক্ষেত্রে কেন্দ্র পরােক্ষভাবে রাজ্যগুলিকে নিয়ন্ত্রণের সুযােগ পায়।

[3] আর্থিক জরুরি অবস্থায় রাজ আর্থিক নীতি নির্ধারণ: সংবিধানের ৩৬০ নং ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি আর্থিক জরুরি অবস্থা ঘােষণা করে কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছাক্রমে রাজ্য সরকারগুলিকে আর্থিক নীতি অনুসরণের নির্দেশ দিতে পারেন।

[4] রাজ্যগুলির হিসাবনিকাশ পরীক্ষার ক্ষমতা: রাজ্য সরকারগুলির আয়ব্যয় ও লেনদেন পরীক্ষার জন্য রাষ্ট্রপতি অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল এবং কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেল নিয়ােগ করেন। অঙ্গরাজ্যগুলি তাদের প্রাপ্ত অর্থ কীভাবে খরচ করল তার হিসাব পরীক্ষার ক্ষমতা সংসদ ও কম্পট্রোলার অডিটর জেনারেলকে দিতে পারে। তা ছাড়া রাষ্ট্রপতির সম্মতিক্রমে অডিটর জেনারেল রাজ্যগুলিকে হিসাবনিকাশ রক্ষার নির্দেশ দিতে পারেন।

[5] যােজনা কমিশন গঠনের ক্ষমতা: কেন্দ্র কর্তৃক যােজনা কমিশন গঠন ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামাের আর্থিক ক্ষেত্রে কেন্দ্রের প্রাধান্যের ইঙ্গিত দেয়। আর্থসামাজিক উন্নয়ন খাতে একটি আর্থিক বছরে কোন রাজ্য কত অর্থ পাবে তা এই কমিশন নির্ধারণ করে।

[6] রাজ্যগুলিকে আর্থিক সহযোগিতার ক্ষমতা: সংবিধানের ২৮২ এবং ২৯৩ নং ধারা অনুসারে খরা, বন্যা বা অন্য কোনাে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে কেন্দ্র নিজের বিবেচনা মতাে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে আর্থিক সাহায্য দিতে পারে।

[7] ঋণ প্রদানের ক্ষমতা: রাজ্যগুলিকে প্রয়ােজন অনুযায়ী ঋণ দেওয়ার ক্ষমতাও কেন্দ্রের আছে।

Political Science (H.S-11) all Questions/Answers here

Leave a Comment