বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা- ১ দায়িত্ব ভিত্তিক, ২ লিঙ্গ ভিত্তিক, ৩ সময়কলা ভিত্তিক, ৪ মালিকানা ভিত্তিক বিভাগ।
১ দায়িত্বভিত্তিক বিভাগ
মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে দায়িত্বের ভিত্তিতে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুটি ভাবে ভাগ করা যায়। যথা –
দিবা বিদ্যালয় – দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি থেকে যাতায়াত করে শিক্ষার্থীরা যে সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে তাই হল দিবা বিদ্যালয়।
আবাসিক বিদ্যালয় – যে সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সকল দায়িত্ব গ্রহণ করে অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এলাকার মধ্যে বসবাস করে, তাদের খাওয়া-দাওয়া, পঠন পাঠন বিদ্যালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রণ হয়। এই ধরনের বিদ্যালয় কে আবাসিক বিদ্যালয় বলা হয়। এই ধরনের বিদ্যালয়ের দায়িত্ব অনেক বেশি।
২ লিঙ্গভিত্তিক বিভাগ
লিঙ্গভেদে বিদ্যালয় গুলি কি আবার তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যথা –
বালকদের বিদ্যালয় – যে সকল বিদ্যালয় কেবলমাত্র বালকদের পঠন-পাঠনের সুযোগ থাকে তাকে পুরুষদের বা বালকদের বিদ্যালয় বলে।
বালিকাদের বিদ্যালয়ে – যেসকল বিদ্যালয় কেবলমাত্র বালিকাদের পঠন-পাঠনের সুযোগ থাকে, তাকে বালিকাদের বিদ্যালয় বলে।
সহশিক্ষা বিদ্যালয় – যে সকল বিদ্যালয়ের বালক ও বালিকা উভয় শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায়। তাকে সহ শিক্ষা বিদ্যালয় বলে।
৩ সময়কাল ভিত্তিক বিদ্যালয়
শিক্ষার সময়কালের ভিত্তিতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুটি ভাগে ভাগ করা যায় –
নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় – এই বিদ্যালয়ের পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার ব্যবস্থা থাকে। এই বিদ্যালয়ের সাধারণত ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা শিক্ষা লাভ করতে পারে। অর্থাৎ পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীযুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় বলে।
মাধ্যমিক বিদ্যালয় – সাধারণত যে সকল বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা থাকে সেই সকল বিদ্যালয়কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় বলে।
উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় – যে সকল বিদ্যালয় পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পঠন পাঠনের ব্যবস্থা থাকে সেই সমস্ত বিদ্যালয় কে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় বলে।
৪ মালিকানার ভিত্তিতে
এছাড়া অন্যান্য যে সকল বিদ্যালয়ের রয়েছে সেই সমস্ত বিদ্যালয় গুলি কিন্তু মালিকানা ভিক্তি বিদ্যালয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
পাবলিক বিদ্যালয় – এখানে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানমূলক উন্নয়নের চেষ্টা ছাড়াও অন্যান্য গুণাবলীর বিকাশের চেষ্টা করা হয়।। ইংল্যান্ডের পাবলিক স্কুলের অনুকরণে এই বিদ্যালয় গঠিত।
সরকারি পরিচালিত বিদ্যালয় – এই সকল বিদ্যালয়গুলির সম্পূর্ণভাবে সরকার দ্বারা পরিচালিত। প্রশাসনিক নিয়ম আর্থিক দায়দায়িত্ব সবকিছু সরকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত বিদ্যালয় – এই সকল বিদ্যালয়ে সরকার অর্থ সহযোগ করলেও বিদ্যালয়ের দৈনন্দিক পাঠক্রমে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ থাকে না। সেজন্য বিদ্যালয় পরিচালন সমিতি আলাদা থাকে।
বেসরকারি বিদ্যালয় – এই সকল বিদ্যালয়ের সরকার কোন অর্থ সাহায্য করে না, এই সমস্ত বিদ্যালয় গুলি পরিচালনা করার জন্য বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে টাকা ব্যয় করতে হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ ও বিদ্যালয়ের যাবতীয় নিয়ম কানুন কর্তৃপক্ষই স্থির করে থাকে।
ধর্মীয় সংস্থা পরিচালিত বিদ্যালয় – এই সকল বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ধর্মীয় সংস্থা দ্বারা স্থাপিত এবং পরিচালিত হয়ে থাকে। সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে এখানে ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থা থাকে।
আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রকার মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও বিদ্যালয় গুলি গুণগত মান বজায় রাখার জন্য সরকারি অনুমোদন প্রয়োজন।