নগরজীবনের ক্লান্তি
নাগরিক কবি সমর সেনের অধিকাংশ কবিতার মেজাজ থেকে অনেকটা আলাদা ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতাটি। এই কবিতায় কবি নগর জীবনের একঘেয়েমি, অবসাদ, বিষন্নতা ও ক্লান্তির ছবি এঁকেছেন। যে জীবনের তার অত্যন্ত পছন্দের, সে জীবন সম্পর্কে আলোচ্য কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে অহীনা। যিনি সারা জীবন কবিতায় নাগরিকতা চর্চা করেছেন, তিনি এই কবিতায় লিখেছেন-
“ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ঘুরেফিরে ঘরে আসে শীতের দুঃস্বপ্নের মতো।”
জীবনের কাছে নগর জীবনের মুগ্ধতা সুদূর প্রসারিত হতে পারে না দূষিত পরিবেশে। যে কবি দেখেছেন ‘অগণন ধোঁয়ার ফণা, চিমনিতে চিড়েছে আকাশ’, যিনি উপলব্ধি করেছেন -‘দিকে দিকে আজ হানা দেয় বর্বর নগর’; তার কাছে নগর জীবন তো বিবর্ণ হয়েই পড়বেই। আলোচ্য কবিতায় শহুরে কোভিদ নগর জীবনের ক্লান্তি প্রকাশিত। অষ্ট গানে সূর্যের স্বর্ণালী আলোর আভাস যখন জলতলে প্রতিবিম্বিত হয় ‘উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ’ আর সেই আলোয় যখন জলের ভাসমান ফেনায় ছুঁইয়ে দেয় আগুনের রং, তখন শহরের এই সন্ধ্যাকালীন সুন্দর যে বুঁদ হয়ে থাকতে চাই কবি মন। তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে চাই নগর জীবনের স্বাদ। কিন্তু নিমেষেই ‘ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস’ শীতের দুঃস্বপ্নের মতো’ কবির বেঁচে থাকাকে বিস্বাদ করে তোলে। শহরের সভ্যতায় লালিত পালিত কোভিদ কাছে এই নাগরিক জীবনের দূষিত ক্লান্তি তাই অসহ্য বলে মনে হয়।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর