‘ভারতবর্ষ’ গল্পে মোল্লাসাহেব ও ভটচাজমশাই এর চরিত্রের তুলনামূলক আলোচনা করো?

ভূমিকা

বিশিষ্ট ছোটগল্পকার সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে দুটি নিয়ামক চরিত্র হল গাঁয়ের মোল্লাসাহেব ও ভটচাজমশাই। গ্রামের দুটি সম্প্রদায়ের মানুষের এরা নেতৃত্বদাতা। তারপর যখন হিন্দু-মুসলমান বুড়ির দেহের দখল নিতে প্রবল উত্তেজিত,

মোল্লা সাহেবের কার্যক্রম

বাজারের চা দোকানে আসা বুড়ি বট গাছে তোলায় মারা গিয়েছে ভেবে চৌকিদারের পরামর্শে তাকে হিন্দুজনেরা বাঁশের চ্যাংদোলায় করে শুকনো নদীর চড়াই ফেলে আসে। ঐদিন বিকেলে মোল্লা সাহেবের তৎপরতায় বুড়ির দেহ আবার একই চ্যাংদোলায় বাজারে ফিরে আসে। দাবি করা হয় বুড়ি মুসলমান তাকে কবর দিতে হবে। হিন্দুরা এর প্রতিবাদ করলে তিনি জানান-বুড়ি যখন মারা যাচ্ছিল, তখন তিনি নাকি ওকে স্পষ্ট কমলা পড়তে শুনেছেন। বুড়িকে কবর দেওয়ায় তাদের কর্তব্য বলে তিনি জানান। তারপর যখন হিন্দু-মুসলমান বুড়ির দেহের দখল নিতে প্রবাল উত্তেজিত, তখন ওই মোল্লাসাহেব‌ই এই মুসলমানদের হয়ে বলছেন- ‘মোছলেম ভাই সকল! জেহাদ, জেহাদ! নারায়ছ তবকীর-আল্লাহু-আকবর!’

ভটচাজমশাইয়ের কার্যক্রম

নদীর চড়া থেকে বুড়ির দেহ মোল্লা সাহেবের নেতৃত্বে বাজারে ফিরিয়ে এলে যখন বাগবিতন্ডা শুরু হয়, তখন ভটচাজমশাই ঘটনাস্থলে প্রবেশ করে বলেন, তিনি নাকি স্পষ্ট শুনেছেন, বুড়ি বলছিল- ‘শ্রী হরি শ্রী হরি শ্রী হরি।’ আমার মোল্লা সাহেবে তার সম্প্রদায় মানুষদের উস্কানিমূলক কথাবার্তা বললে ভটচাজমশাই ও একই ভঙ্গিতে স্বপক্ষের লোকদের উদ্দেশ্যে বলেন-‘জয় মা কালী! যবন নিধনে অবতীর্ণ হও মা! জয় মা কালী কি জয়!’

দুজনের চারিত্রিক তুলনা

দেখা যে এই দুই ব্যক্তি ধর্মধ্বজী। জরাভারগ্রস্তা বুড়িকে এরা কোন সহায়তা দেয়নি, কিন্তু তার শবের দখল নিতে, এরা হঠাৎ ধার্মিক সেজে বসেছে। এরা যেন সামাজিক শুকুন। শব নিয়েই কামড়াকামড়ি করেছে। এরা নেতিচরিত্র, এরা মিথ্যাচার তো করেছে, প্ররোচনা মূলক উস্কানি দিয়ে মানুষকে দাঙ্গায় সামিল করতে চেয়েছে।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment