ভূমিকা
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ছোট গল্প ‘ভারতবর্ষ’ এর চৌকিদার চরিত্রটি একটি গৌণ চরিত্র। চরিত্রটিতে দুটি বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট ভাবে পরিলক্ষিত হয়-বাস্তব সচেতনতা ও কর্তব্যপরায়ণতা।
বাস্তব সচেতনতা
চৌকিদার গা গঞ্জের আইনরক্ষক ও নিম্নশ্রেণীর সরকারি প্রতিনিধি। বাজার পার্শ্বস্থ বট গাছের খোদলে বুড়ির মৃত্যু হলে গাঁয়ের লোকেরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে চৌকিদারকে খবর দেয়। চৌকিদার যে বাস্তব সচেতন এখানে তা নিবিড় লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সে বলে-‘থানায় খবর দিয়ে কি হবে? ফাঁপিতে এক ভিকিরি পটল তুলেছে, তার আবার থানা-পুলিশ!’ থানা পাঁচ ক্রোশ দূরে, খবর দিলে পুলিশ আসতে রাত দুপুর। বাঁশি মরা, গন্ধ ছুটবে ইত্যাদি ভেবে সে সৎ পরামর্শ দেয়, ‘নদীতে ফেলে দিয়ে এসো! ঠিক গতি হয়ে যাবে-যা হবার!’ চৌকিদারের বাস্তব বুদ্ধি বিচক্ষণতা এখানে লক্ষ্য করার মতো।
কর্তব্যপরায়ণতা
চৌকিদারের পরামর্শে হিন্দুজনের আবরির দেহ বাঁশের চ্যাংদোলায় শুকনো নদীর চড়াই ফেলে দিয়ে আসার পর, ঐদিন বিকেলে মুসলমানরা আবার ওই একই চ্যাংদোলায় তা ফিরিয়ে আনে বাজারে। বুড়ি হিন্দু না মুসলমান, এই প্রশ্নের সমাধান করতে উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ যখন সম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বে লিপ্ত তখন কর্তব্যপরায়ণ আইন রক্ষক সরকারি প্রতিনিধি চৌকিদারের সত্তিকারের আত্মপ্রকাশ। নীল ইউইনিফর্ম পড়া, হাতে লাঠি চৌকিদার বজ্রকন্ঠে একবার ‘সাবধান’, একবার ‘খবরদার’ বলে গর্জে উঠেছিল, এতে সে হয়তো উত্তেজিত-বিবদমান দুই সম্প্রদায়কে সঠিক ঠেকিয়ে রাখতে পারছিল না, তবে তার মরিয়া চেষ্টাটি ছিল নির্ভেজল।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর