রচনাকাল
‘বিভাব’ নাটকটির সম্ভাব্য রচনাকাল ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে। সম্ভবত ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে প্রগতি লেখক সংঘের অন্তিম সম্মেলন এটি ‘বহুরূপী’র প্রযোজনায় অভিনীত হয়। মিনিট চল্লিশের অভিনয় কালের ক্ষুদ্র না নাটক এটি। নাটক দিতে মুকাভিনয় ও অ্যআবসআর্ড নাটকের প্রচ্ছন্ন ছায়াপথ ঘটতে দেখা গেলেও, সূক্ষ্ম হাস্যরসের প্লাবনের মধ্যে নানা সামাজিক প্রসঙ্গ ও মাথা ছাড়া দিয়ে উঠতে দেখা যায়।
প্রেক্ষাপট
ভালো মঞ্চের অভাব, আলো, মঞ্চে সজ্জা, অর্থনৈতিক অভাবের পাশাপাশি দর্শকের রুচিগত প্রেক্ষাপটেও নাটকের উল্লেখিত হয়েছে। বাংলার অবস্থান তখন ভারতীয় রাজনীতিক মঞ্চে চরমভাবে বিপর্যয়ের। কারণ ১৯৪৩ এর মন্বন্তর, ১৯৪৬ এর দাঙ্গা এবং ১৯৪৭ এর মর্মান্তিক দেশ ভোগের প্রেক্ষিতে বাংলার অবস্থান তখন টালমাটাল। ছিন্নমূল-ক্ষুধার্ত-উদ্বাস্তু মানুষের মল তখন প্রান্তিক স্থান ছাড়িয়ে বঙ্গের জনজীবনকে কাঁপিয়ে তুলেছে। সর্বভারতীয় জননেতা বল্লভ ভাই প্যাটেল আলগা মন্তব্য করে বসলেন-বাঙালিরা হাসতে পারে না। শুধু কাঁদে।
এই মন্তব্য আপামর বাঙালি মনের তীব্র অভিঘাত হেনেছিল। স্পর্শকতার এই প্রসঙ্গে সূত্র ধরে নাট্যচরিত্র শম্ভু হাসির খোরাক বঙ্গ জীবন থেকে সংগ্রহ করে সকলকে হাসাতে চেয়েছিলে। নিতান্ত সাজানো প্রেমের দৃষ্টির সঙ্গে রাজনীতিকে জুড়ে কোন গভীরতা না পেয়ে নাটকের চরিত্রেরা ঘরের বাইরে বেরোলেন ‘হাসির খোরাক’ সন্ধানের জন্য। হাতে ফেস্টুন নিয়ে আওয়াজ উঠল- ‘চাল চাই, কাপড় চাই’ । খাদ্যের দাবি জানাতে গিয়ে একটি ছেলে ও একটি মেয়ের মৃত্যু হলে আত্মমগ্ন দর্শকের চৈতন্য জায়গাতে শম্ভু মিত্র ও অমর গাঙ্গুলী মঞ্চে আসেন। “এবার নিশ্চয়ই লোকের খুব হাসি পাবে?” -নাট্যকারের এরূপ ব্যঙ্গোক্তিতে নাটক ও জনরুচিতে চূড়ান্ত আঘাত হানা হয়েছে।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর