‘বিভাব’ নাটকে নাট্যকারের সংলাপ রচনা দক্ষতা আলোচনা করো?

নাট্য চরিত্র গুলির সংলাপ

সংলাপ যে কোন ধরনের নাট্যশৈলীর‌ই প্রাণ। নাট্যকার শম্ভু মিত্র তার নাটকের সংলাপ কে তীক্ষ্ণ, তির্যক, ধারালো করে ব্যবহার করেছেন। ‘বিভাব’ ছোট নাটক, তার সূচনায় নাট্যকার একটি দীর্ঘ সংলাপ নিবেদন করেছেন ; যাতে নাট্যমঞ্চ, মঞ্চসজ্জা, নাট্যপ্রয়োগ ইত্যাদি সম্পর্কে অনেক বধোদীপ্তি কথাবার্তার পর শুরু হয়েছে তিনি চরিত্র-শম্ভু-বৌদি-অমরের নাট্যালাভ। নাটক হাসির জনপ্রিয়তা বোঝাতে শম্ভু চরিত্রের সংলাপ-“সম্পাদক বলেছেন হাসির নাটক করতে হবে, তার নাকি দারুণ বক্স অফিস।” প্রসঙ্গক্রমে অমর বলেন- “আমরা বাঙালিরা শুনি কাঁদুনে জাত-। ” শম্ভুর ব্যঙ্গ-“হ্যাঁ, বল্লভ ভাই বলে গেছেন-“।

সংলাপের তির্যকতা ও তীক্ষ্ণতা

সংলাপের তির্যকতা ও তীক্ষ্ণতা আসে আরো পরে। সিদ্ধান্ত হয়-একটা ‘লভ সিন’ করা হবে। কারণ বৌদির মতে পৃথিবীর সবচেয়ে পপুলার জিনিস হলো প্রেম। শম্ভু তার স্বীকার করে মুহূর্তে বলেন-নিশ্চয়ই, দেখছো না বার্থ রেট কি হয় !’ নেপথ্যে রবীন্দ্র সংগীতের বিকৃত গায়কি নিয়ে যে সংলাপ, তা অসাধারণ। যিনি হারমোনিয়াম বাজার ছিলেন তিনি বলেন-‘আরে সব সময়ে কি aesthetic দিক দেখলেই চলে? Box office বলেও তো একটা কথা আছে? উত্তরের শম্ভু বলেন -“আর বংশদন্ড হলেও একটা কথা আছে। সেটা যখন মাথায় পড়বে বুঝবে তখন।” ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ -এর প্রসঙ্গে শম্ভুর খোঁচা -” বাব্বা , সমস্ত লভই তো দেখি-বিয়ের দু বছরের মধ্যেই গনফট।”

এ নাটকে সংলাপ জোরালো। যাতে হাস্যের উদ্যান হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে সংলাপ এলেও, ভেতরের অনিবার্য থেকে যাই সমাজ জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে উঠে আসা মননের দাহ, দৈন ও চোখের জল।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment