অভিনবত্ব
প্রখ্যাত নট, নাট্যকার ও নাট্য প্রবক্তা শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ একটি একাঙ্কিকা, যার মধ্যে অভিনবত্ব প্রচুর। নাটকের সূচনা এর স্বয়ং নাট্যকার চরিত্র হয়ে একটি দীর্ঘ সংলাপ বলেন। আর- “পর্দা খুললে দেখা যায় মঞ্চ সম্পূর্ণ ফাঁকা।” আলোয় রংচং নেই, অর্থাৎ ‘সাদাসিধে’ সেই সাদা আলোয় ধোওয়া মঞ্চের মাঝখানে স্বয়ং নাট্যকার দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। এক সময় মঞ্চে অমর গাঙ্গুলীকে চরিত্র হয়ে আসতে দেখা যায়।
স্টেজে সেই একই। সেখানে অভিনয়ের মাধ্যমেই সিড়ি ভাঙ্গা, জ্বালানা খোলা, কল্পিত চেয়ারে বসার ভঙ্গি চলতে থাকে। এরপর নাট্যনির্দেশ অনুযায়ী পকেট থেকে সিগারেট বের করা, ধরানো সিগারেট ফেলে দেওয়া, চায়ের কাপ বয়ে আনা বা ধরা ইত্যাদি টুকরো টুকরো দৃশ্যের অভিনয় কল্প ভঙ্গিমায় মাইমের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। ‘লভ সিন’-এর অভিনয় করতে মঞ্চে চেয়ার-টেবিল ছড়ানো দরকার ছিল, নাটকে তাও কল্পিত- “দুটো কল্পিত চেয়ার এবং একটা টেবিল ওরা দুজনে নিয়ে যেন দেখে আসি এক দিকে..।”
মঞ্চ-সজ্জা
নেপথ্যে হারমোনিয়াম যোগে মেয়েলি কন্ঠে ন্যাকামির ভঙ্গিতে গাওয়া ‘মালতি লতা দোলে’ গানের লাইনে বৌদি যখন ঠোট মেলান তখনও তার দুহাতে ধরা থাকে একটি কল্পিত গাছের ডাল। মঞ্চে একটি কল্পিত জানালাও থাকতে দেখা যায়। মঞ্চে প্রবেশ করতে দেখা যায় এমনকি এক ব্যক্তিকে, যে একটা মোটুর আঁকা ছবি ধরে মুখে হর্নের আওয়াজ করে। একইভাবে অন্য একজন একটা বাসের ছবি নিয়ে প্রবেশ করে। এইভাবে আসে হাতরিকশার ছবি নিয়ে মুখ ‘টুং টুং’ আওয়াজ করা আর-এক ব্যক্তি।
উপকরণ
নাটকের প্রয়োজনীয় আরো কিছু উপকরণ ব্যবহৃত হতে দেখা যায়-ট্রামের ছবি, ফেস্টুন-পতাকা ইত্যাদি বলা বাহুল্য এই নাটকে মঞ্চ সজ্জা তেমন জোড়ালো নয়। তবে গেট উইং, উইং, মূল পর্দা এসব সাধারণ উপকরণ মঞ্চে থাকে। শেষ দৃশ্য করুণ্য বোঝাতে লাল আলোর ব্যবহার লক্ষ্যণীয়।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর