বাংলা চিত্রকলা ধারায় ‘কোম্পানির শৈলী’ কি? এই প্রসঙ্গে ‘মুর্শিদাবাদ পর্ব’-এর চিত্রকলাচর্চা সম্পর্কে যা জান লেখো?

কোম্পানি শৈলী

১১৭৬ বঙ্গাব্দে দুর্ভিক্ষ মন্বন্তর বাংলার চিত্রচর্চার ধারায় আঘাত হানলে শিল্পীরা কেউ প্রাণে মারা যান আবার কিছু শিল্পী ব্রিটিশ শাসক শ্রেণীর পৃষ্ঠপোষকতায় চিত্রচর্চা শুরু করেন। এর ফলে প্রাচীন মুঘল রীতি ও আধুনিক পাশ্চাত্য রীতির সংমিশ্রণে গড়ে ওঠে এক মিশ্র মুঘল নবরীতি, যা ‘কোম্পানির শৈলী’ নামে পরিচিত।

কলকাতা কেন্দ্রিক কোম্পানি শৈলী

কোম্পানির শরীরের প্রথম প্রকাশ ঘটে মুর্শিদাবাদের অষ্টাদশ শতক এবং তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে কলকাতা, পটনা, কটক ছাপড়া, বরাণসী ও লখন‌উতে। এর পরবর্তী 19 শতকের গোড়ার দিকে দিল্লি ও আগ্রাতে ও এটি প্রসারণ লাভ করে। দেশের মানুষ পোশাক পরিচ্ছন্ন, হাট বাজার, যানবাহন, উৎসব, মিস্ত্রি, নাপিত, মুচি, দর্জি প্রমুখ খেটে খাওয়ার শ্রমজীবী মানুষের কথা এই চিত্র শৈলীতে ফুটে উঠলো। বলা বাহুল্য, মুর্শিদাবাদ চিত্র শৈলী থেকে কলকাতা চিত্রশৈলীর গুরুত্ব বৃদ্ধি পেল। সেকালে ইংরেজ চিত্রশিল্পীরা ভারতে এসেছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন-টেলিকেটল, উইলিয়াম ড্যানিয়েল, জর্জ চীনেরি প্রমুখ।

এর পাশাপাশি ১৯ শতকে পাথরিয়া ঘাটার গোপীমোহন ঠাকুর, বর্ধমানের মহারাজা, পাইকপাড়া মহারাজা ও শিল্পকলা সংগ্রহের রেয়াজ শুরু করেন। বলা বাহুল্য, এদেশীয় শিল্পরা তাদের অনুচিত্রের পরম্পরা থেকে বেরিয়ে এসে ইউরোপীয় বর্ণ সম্পাতের আঙ্গিক ধারণা করলেন। এর ফলে চিত্রশিল্পী এক মিশ্র আঙ্গিকের চেহারা নিল। অর্থাৎ স্থানীয় শিল্পীরা অস্বচ্ছ জল রঙে গুয়াস বদলে স্বচ্ছ জল রঙে ছবি আঁকতে শুরু করলেন। শক্ত কাঠের ফ্রেমের বদলে ইউরোপের সাদা কাগজের ছবি আঁকা শুরু হয়। এই মিশ্রণটি কলকাতা ক্যান্ডি কোম্পানি সৈদিকে এক অন্য মাত্রা দান করেছে।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment