প্রভাব
বাংলাদেশের যাত্রা গান একটি জনপ্রিয় গীতিধারা। মূলত বাংলা গানের এই ধারাটি উদ্ভব ষোড়শ শতাব্দীতে। যাত্রা শব্দটি এক্ষেত্রে পথযাত্রা অর্থে ব্যবহৃত হয় না। যাত্রা বলতে শুভ উৎসব বা অনুষ্ঠানের নিত্য গীত সহযোগে সংলাপ ধর্মী দলবদ্ধ অভিনয় কে বোঝানো হয়। প্রাচীনকালে যাত্রা ছিল কেবল দেব মহাত্মক মূলক। কৃষ্ণ নিলাই ছিল অধিকাংশ যাত্রার বিষয়। পরবর্তীকালে অবশ্য যাত্রার বিষয় হিসেবে রামায়ণ, মহাভারত, বিভিন্ন পুরাণের কথা, লোকগল্প প্রাধান্য পেয়েছে। একটি দীর্ঘ সময় রাম যাত্রা, চন্ডী যাত্রা, কালীয় দমন যাত্রা জনপ্রিয় ছিল। এই যাত্রাপালা গানে সহজ সুরে গ্রাম বাংলার অন্তরঙ্গতা ধরা পড়েছে।
যাত্রা গানের স্থান
জয়দেব ‘গীতগোবিন্দম’ কিংবা বড়ু চন্ডীদাস এর শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে যাত্রা পালা ক্ষীন সূচনা হয়েছিল বলে অনেকেই মনে করেন। রামায়ণ-মহাভারত থেকে যাত্রা গান নির্মাণ করে পাঁচালী ছন্দে তা গাওয়ার প্রচলন ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যাত্রা গানের ধরন বদলেছে। যাত্রা গানের বিষয়বৈচিত্র্য এসেছে সমকালীনতা প্রভাব বিস্তার করার পর। কৃষ্ণ যাত্রা রচনা কৃষ্ণ কমল গোস্বামীর নাম যেন উল্লেখের দাবি রাখে, তেমনি গোপাল উড়ের নামও এককালে যাত্রা গানে উল্লেখ করতেই হয়। যাত্রা গান শিক্ষিত অশিক্ষিত সকল মানুষের কাছেই লোক শিক্ষার উপকরণ হয়েই পৌঁছেছে বারবার। বাংলা গানের অন্যান্য ধারাকে যাত্রা গান প্রভাবিত করেছে। রবীন্দ্রনাথের গানে ও যাত্রা গানের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। সুতরাং বাংলা গানের ধারায় যাত্রা গান ও স্বতন্ত্র জাগায় প্রতিষ্ঠা করেছে সন্দেহ নেই।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর