বাংলার চিত্রকলার ধারায় মুর্শিদাবাদ পর্ব তথা মুর্শিদাবাদ শৈলীর গুরুত্ব ও অবদান আলোচনা করো ?

গুরুত্ব

নবাব আলিবর্দি খাঁর শাসনকালে ১৭৪০-১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদাবাদ শৈলির সর্বোৎকৃষ্ট বিকাশ ও সমৃদ্ধি ঘটেছিল। বাংলার তৎকালীন রাজনৈতিক রাজধানী মুর্শিদাবাদের মুঘল আমলের সূত্রে স্মরণীয় দুটি উৎসব ছিল -‘মহরম’ ও ‘খোজা খিজির’ উৎসব। ১৭০০-১৭২৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নবাব মুর্শিদকুলি খাঁর আমলে উৎসবের ভেলা, জলযান বা রং লন্ঠন নির্মাণের জন্য দিল্লি থেকে কুশলী কারুশিল্পীরা বাংলায় এসে সমাদর লাভ করেন। এদের নির্মিত অভ্রপাতে ও আলোশিল্পে কোরনের বাণী, মসজিদ, গম্বুজ, গাছপালা নানা রকমের মূর্তি চিত্রিত হত। বাংলার বউ শিল্পীও এতে অংশ নিতেন। এই লোক শিল্পদের দান স্মরণীয়। ১৭২০ খ্রিস্টাব্দে আঁকা একটি ছবিতে এই উৎসব চিত্র অপূর্বতায় বিভাসিত। যার মধ্যে মুঘল ও মুর্শিদাবাদ ঘরোনার মিশ্র রীতির পরিচয় লিপিবদ্ধ।

অবদান

মুর্শিদাবাদ শৈলির পূর্ণাঙ্গ রূপ পাওয়া যায় নবাব আলীবর্দী খার আমলে। তিনি ছিলেন শিল্প রসিক এবং শিল্পচর্চা কারীদের প্রকৃত পৃষ্ঠপোষক। সেই সময়কার জৈনক শিল্পীর আঁকা ছবিতে আলীবর্দির শিকার পর্বে নানা মুহূর্ত ধরা পড়েছে। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা বিলাসী ছিলেন এই চিত্রচর্চায় প্রভাব ডানে তার মনস্কতা কাজ করেছিল। তার আমলে মুর্শিদাবাদ শৈলীতে প্রবল বৈচিত্র্য বিশিষ্টতা দেখা যায়। এই সময় ছবিতে বৈচিত্র আনতে এলে জ্যামিতিক বিন্যাসে অভূতপূর্ব নতুনত্ব। বাংলার জীবন চিত্রকে প্রাধান্য দিয়েও ছবিতে নব নব বিষয় সংযোজিত হল। এই সময়ের বাংলার শিল্পীদের ওপর একধারে রাজস্থানী, জয়পুরী শৈলী ও মুঘল সংস্কৃতির প্রভাবটি সুস্পষ্ট। সিরাজের পরবর্তী ক্ষেত্রে মীরজাফর মিরকাশিমের আমলে মুর্শিদাবাদ শৈলীতে বিষয়ে যেমন বিপুল পরিবর্তন আসে, তেমন ক্রমিক পাশ্চাত্যশৈলীর হালকা প্রভাব পড়তে শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারীদের সূত্রে।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment