সারদারঞ্জন রায় চৌধুরী সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ। জন্ম তার কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর মশুয়া গ্রামে। একহাতে বই, আরেকটা টাই ব্যাট, সারদা রঞ্জন এর পরিচিত ব্যক্তির এভাবেই পরিচয় দিতেন। উনি বাংলার ক্রিকেটের জনক। সাদা দাড়ি ও মারকুটে ব্যাটিং এর কারণে তাকে বলা হত বাঙালির ডাব্লিউ.জি.গ্রেস। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে পূর্ববঙ্গে তিনি চার ভাইকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। তার বয়স তখন ৮।
অবদান
সারদারঞ্জনের সময় ক্রিকেট খেলতো ইংরেজরাই। ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব ছিল সবচেয়ে প্রভাবশালী দল। রায় চৌধুরীর পাঁচ ভাই সারদারঞ্জন, উপেন্দ্রকিশোর, মুক্তিদারঞ্জন, কুলদারঞ্জন, ও প্রমদারঞ্জন – মিলে গড়ে তুলেছেন ‘ঢাকা কলেজের ক্রিকেট ক্লাব’। পরে টাউন ক্লাবও গড়ে তোলেন কলকাতায় দুই দলেরই ক্যাপ্টেন সারদা রঞ্জন। দুই দলই নিয়মিত সাহেবদের দলের বিরুদ্ধে খেলতো। ইতিহাস বিদ মুনতাসির মানুনের মতে, “ঢাকায় ক্রিকেট জোরদার হয় ‘ঢাকা কলেজ ক্লাব’ গড়ে ওঠার পর।.. অখন্ডভঙ্গের প্রথম ক্রিকেট ক্লাব হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে। ১৮৮৪ সালে কলকাতার উইডেন গার্ডেনে ক্যালকাটা প্রেসিডেন্সি ক্লাবের সঙ্গে এক খোলায় ঢাকা কলেজ জয়লাভ করে।”
সারদা রঞ্জন মেট্রোপলিটন কলেজে যোগদান করেন বিদ্যাসাগরের অনুরোধে কিন্তু বেতন অনিয়মিত হওয়ায় তিনি সারদা এসড়ায় এন্ড কোম্পানি নামে বই ও ক্রিকেট পণ্য বিক্রি করতে শুরু করেন। ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে শুরু করেন বাংলার প্রথম ক্রিকেট সামগ্রীর দোকান। সে সময় বিলিতি ব্যাগ ও বল পাওয়া যেত তার দোকানে। শিয়ালকোট থেকে আনা উইলো কাঠের শিক্ষার্থীদের জন্য সস্তায় ব্যাট বানানো শুরু হয় তার যশোর রোডের কারখানায়। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার শিল্পপর্ণমেলায় তাদের ব্যালান্সড ব্যাট বিশেষ পুরস্কার পায়। ক্রিকেট কোচ হিসেবে তিনি ছিলেন অনন্য।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর