“বহুদিন জঙ্গলে যায়নি/বহুদিন শহরেই আছি” -বহুদিন জঙ্গলে যায়নি বলে কবি কেন আক্ষেপ করেছেন? বহুদিন জঙ্গলে না যাওয়ার সঙ্গে বহুদিন শহরে থাকা সম্পর্কটি নিরূপণ করো।?

উদ্ধৃতাংশটি আধুনিক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘অঙ্গুরী তোর হিরণ্য জল’ কাব্যের ‘আমি দেখি’ কবিতা অংশ। ছড়িয়ে থাকা গাছপালা নয়াভিরাম সবুজের কথা বলা হয়েছে।

জঙ্গলে না যাওয়ার সঙ্গে শহরে থাকা সম্পর্ক

নগর কেন্দ্রিক সভ্যতা যেন চাহিদা ও যোগানের এক অদ্ভুত খেলার সাক্ষী। বৃক্ষ মানুষের যে কেবল খাদ্য খাদকের সম্পর্ক নয়-শ্বাস-প্রশ্বাসের সূত্রেও যে তারা অচ্ছেদ্যবন্ধনে জড়িত, শহর তা ভুলতে বসেছে। কবি দেখেছেন নাগরিক জীবনের নিদারুণ অবক্ষয়, দূষণে মানবতার গভীর অসুখ। আপন ঘরে নাগরিক সুর সভ্যতার আলোক জ্বালাতে শহর মৃত প্রায় নাগরীতে পর্যবসতি। রিক্ততা তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে, বিষ তার শিরায় শিরায়, মরণ তার হৃদয়কে প্রায় স্তব্ধ করে দিয়েছে। কবি তো এই শহরের রাখাল। তিনি কেমন করে মুখ ফিরিয়ে থাকেন। কবির যন্ত্রণাই তো কবিতার উৎসভূমি। কবি নিজ কাজের ব্যস্ততায় জঙ্গলের অরণ্যকে সুখ থেকে বঞ্চিত। শহর জীবনে বহুদিন ধরেই তিনি ক্লান্ত, বিধ্বস্ত, রোগাক্রান্ত। নগর জীবনে গাছ, সবুজ, অরণ্যের স্নেহমিশ্রিত নিবিড়তার জন্য কবি প্রাণ ব্যাকুল। এইভাবে বহুদিনের বেদনাকে বহু জীবনের সুখে পরিণত করতে প্রয়াসী কবি।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment