বৈশিষ্ট্য
থনডাইকের শিখন তত্ত্বের যে সকল বৈশিষ্ট্য দেখতে পাই তা নিয়ে আলোচনা করা হলো-
সক্রিয়তা:- প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন কৌশলে অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো আত্মসক্রিয়তা। এই আত্মীয়তার মাধ্যমে প্রাণী নিজের সমস্যা সমাধান করে।
পুনরাবৃত্তি:-প্রাণী পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে অর্থাৎ, পর্যায়ক্রমে সমস্যা সমাধান করে। এই শিখন কৌশলটি হল পুনরাবৃত্তির মূলক।
উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতনতা:- উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতনতা প্রাণীকে আত্ম সংশোধনের মাধ্যমে শিখনে অনুপ্রাণিত করে।
বহুমুখী প্রক্রিয়া:-প্রচেষ্টা ও ভুলের কৌশলে সমস্যার সমাধানের জন্য প্রাণীকে সমস্যার প্রকৃতি অনুযায়ী নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া করতে হয়। এই বৈশিষ্ট্য থনডাইক তার বহুমুখী সূত্রে উল্লেখ করেছেন।
ফললাভ:-এই শিখন কৌশল প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়ার স্থিতিকরণ এবং অপ্রয়োজনীয়তার প্রতিক্রিয়া বর্জন, উভয় ধরনের আচরণে প্রাণীর মধ্যে ফল প্রাপ্তি দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে।
সাদৃশ্য ভিত্তিক প্রতিক্রিয়া:-যে কোন নতুন সমস্যা মূলক শিখন পরিস্থিতিতে প্রাণীর প্রথম প্রতিক্রিয়া বা আচরণটি তার পূর্বে সম্পাদিত আচরণের পুনরাবৃত্তি মাত্র।
আংশিক প্রতিক্রিয়া:-এই শিখন কৌশলে আচরণ ধারা পরিবর্তনে প্রকৃতি আরেকটি বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করেছেন তা আংশিক প্রতিক্রিয়ার সূত্রের মাধ্যমে।
জৈব মানসিক প্রস্তুতি:-এই শিখন কৌশলে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি হল জৈব মানসিক প্রস্তুতি। কোন সমস্যার সঠিক সমাধান করতে গেলে শিক্ষার্থীর জৈব মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন।
উপরের আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি যে, শিশু প্রচেষ্টা ও ভুলের কৌশল প্রয়োগ করে তার জীবন পরিস্থিতিতে সমস্যার সমাধানের জন্য শিক্ষালাভ করতে পারে এবং নতুন নতুন সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে ক্ষমতা আয়তো করে।
প্রচেষ্টা ও ভুলের তত্ত্বের শিক্ষাগত গুরুত্ব
প্রচেষ্টা ও ভুলের তত্ত্বে শিক্ষার গুরুত্ব অনেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে শিক্ষার্থীদের ওপর। সুতরাং শিক্ষাগত গুরুত্ব আমরা নিজে আলোচনা করলাম।
প্রস্তুতি:-এই তথ্য অনুযায়ী শিক্ষার্থীর কোন বিষয় শেখার জন্য যেমন দৈহিক প্রস্তুতি প্রয়োজন তেমনি মানসিক প্রস্তুতি ও একান্ত ভাবে থাকা দরকার। অর্থাৎ, দৈহিক ও মানসিক প্রস্তুতি ছাড়া কোন বিষয়ে জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়।
অনুবন্ধনের নীতি অনুসরণ:-শিক্ষার্থীদের পাঠনের বিষয়বস্তু অদ্ভুত জ্ঞানের ভিত্তিতে বিভক্ত করতে হবে। যাতে শিখন এর প্রক্রিয়া সাবলীল গতিতে এগিয়ে যেতে পারে।
প্রেষণার সৃষ্টি:-শিক্ষার্থীকে নতুন বিষয় শিখুন এবং তত্ত্ব প্রেষণার সৃষ্টিতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
অনুশীলনের ওপর গুরুত্ব আরোপ:- থনডাইক তার শিখন তত্ত্বে কোন বিষয় শিখনের জন্য অনুশীলনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। শিক্ষার্থীরা যাতে বারবার অনুসরণের মাধ্যমে ত্রুটিগুলি ক্রমে দূর করে সেদিকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব প্রদান করা হয়।
ফলপ্রাপ্তি:- শিখনে ফলের ওপর নির্ভর করে শিক্ষা ক্ষমতা, ফলপ্রাপ্তি যদি খারাপ হয় তবে শিক্ষা গ্রহণে শিক্ষার্থীর আগ্রহ প্রকাশ করবে না। আবার ফলপ্রাপ্তি যদি আনন্দে হয় বা সুখবর হয় তবে সেই শিখনে শিক্ষার্থী অনেক বেশি আগ্রহ প্রকাশ করবে।
সমস্যা সমাধান:-থনডাইকের প্রচেষ্টা ও ভুলের তথ্য শিক্ষার্থীকে শিখন সহায়ক সমস্যার সমাধানে যেমন সাহায্য করে তেমনি তার নানান সমস্যার সমাধান নিয়ে তাকে সক্রিয় করে তোলে।
সহজ থেকে কঠিন বিষয়ে নির্বাচন:-শিক্ষার্থীদের দৈহিক ও মানসিক পরিণমন অনুযায়ী বিষয় নির্বাচন করতে হবে, যাতে তারা সহজে বস্তু আয়ত্ত করতে পারে। অর্থাৎ সহজে কঠিন বিষয়বস্তু নির্বাচনের নীতি অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে।
দৈনিক শিখন এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত শিক্ষা:-শিক্ষার বিষয়বস্তু হবে দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। এর ফলে শিক্ষার্থীদের শিখনে যেমন আগ্রহ বাড়ে তেমনি শিখনের ফল অনেক বেশি ভালো ও স্থায়ী হয়।
ফিডব্যাক প্রদান:-শিক্ষার্থীদের শিখনের উৎসাহিত করার জন্য পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। পুরস্কার শিক্ষার্থীকে ফিডব্যাক প্রদানে সাহায্য করবে।
সুতরাং প্রচেষ্টা ও ভুলের শিখন এমন একটি শিখন কৌশল যা শিক্ষার্থীকে ভুল সংশোধন, সঠিক প্রতিক্রিয়া করতে সাহায্য করে। যা শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনে তার প্রয়োগ ঘটিয়ে নানান সমস্যার সমাধান করে। তাই আজকের শিক্ষা ব্যবস্থার এই তত্ত্বের গুরুত্ব অপরিসীম
দ্বাদশ শ্রেণী শিক্ষাবিজ্ঞানের (education) সব প্রশ্ন উত্তর
প্রাচীন অনুবর্তন বলছে আমরা কি বুঝি?
প্যাভলবের প্রাচীন অনুবর্তন পরিবর্তন কৌশল ও তার পরীক্ষা
প্রাচীন অনুবর্তনের শর্তাবলী, নীতি ও গুরুত্ব?
অপারেট অনুবর্তন কি ও তার স্কিনার বক্সের পরীক্ষা
শিক্ষা ক্ষেত্রে অপারেন্ট অনুবর্তন এর বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব এবং পার্থক্য
প্রচেষ্টা ও ভুলের পরীক্ষা শিখন কৌশল থনডাইকের ভূমিকা
প্রচেষ্টা ও ভুলের তত্ত্বের শিক্ষাগত বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব
গৌণ সূত্রাবলী কি এবং তাদের বৈশিষ্ট্য